সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা মণ দরে ধান ক্রয়ের দাবিতে যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে খাদ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় কৃষক সমিতি জেলা শাখার উদ্যোগে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
Advertisement
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, এ বছর যশোরসহ সমস্ত দেশের কৃষকরা ইরি ও বোরো ধানের বাম্পার উৎপাদন করেছে। যশোর জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৫ হাজার ৯৭০ মেট্রিক টন। কিন্তু কৃষক বাজারে লোকসানে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। সরকার ইতিমধ্যে দায়সারাভাবে ধান ও চালের দর নির্ধারণ করেছে। ৯ লাখ টন চাল ও দেড় লাখ টন চাল ক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু কৃষকরা ধান ও চাল দিতে পারবে না। কারণ কৃষক কীভাবে সরাসরি ধান-চাল বিক্রি করতে পারবে সেই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কৃষকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।
এবার যশোর জেলায় সার, বীজ, সেচ, নিড়ানি, পরিবহন, কাটা-বাঁধা, মাড়াই বাবদ প্রতিমণ ধানে ৮৫০ থেকে ৯২৪ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। সরকার ধানের মণ নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ৪০ টাকা। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা মণ।
কৃষকদের সুরক্ষার জন্য স্মারকলিপিতে আট দফা দাবি করা হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- মণপ্রতি ধানের দর দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। চালের বদলে ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্রয় কেন্দ্র খুলে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পুরোটাই ধান ক্রয় করতে হবে। এক্ষেত্রে কৃষকদের আগাম পুঁজি দিতে হবে। ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে সিন্ডিকেট ও দলীয় ক্যাডারদের অবৈধ নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে। ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রির সময় বিভিন্ন অজুহাতে কৃষকদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভর্তুকির কৃষি উপকরণ কৃষকদের বিতরণ করতে হবে। গরীব কৃষকের জন্য হ্রাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে। কম দামে সার ও সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষকদের জন্য শস্য বীমা চালু করতে হবে।
Advertisement
স্মারকলিপি প্রদানকালে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও যশোর জেলা শাখার সভাপতি ইকবাল কবীর জাহিদ, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা অনিল বিশ্বাস, জাতীয় কৃষক সমিতি যশোর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, গাজী আবদুল হামিদ, বিপুল বিশ্বাস, হাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মিলন রহমান/আরএআর/জেআইএম