সারাদেশে দলীয় কোন্দল-গ্রুপিং এবং কি কারণে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীরা পরাজিত হচ্ছেন তা অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আলোচনার পর এ কমিটি গঠন করা হয়।
Advertisement
সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহর নেতৃত্বে এ কমিটিতে রয়েছেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মো. আব্দুর রহমান।
সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, দলের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ দলীয় কোন্দলের প্রসঙ্গ টেনে সভায় বক্তব্য উত্থাপন করেন। এরপর পুরো বৈঠকে দলের বিভিন্ন স্তরে কোন্দল নিরসনের বিষয় নিয়েই আলোচনা করেন প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনেও কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। একই সঙ্গে নেতাদের বক্তব্যে উঠে আসে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ের বিভিন্ন দিক। পরে অনুসন্ধান কমিটিকে সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান করে দলীয় প্রধানের নিকট প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।
নেতাদের বক্তব্য শুনে দলের ও নৌকার বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় যেসব নেতা ও এমপি অবস্থান নিয়েছে তাদেরকে ভবিষ্যতে নৌকা প্রতীক দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Advertisement
সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহকে প্রধান করে চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের সমন্বয়ে গঠিত কমিটিকে সারাদেশে দলের গ্রুপিংয়ে জড়িতদের চিহ্নিত ও তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ প্রধান।
একই সঙ্গে সারাদেশের এ সকল কোন্দল-গ্রুপিং নিরসনে কাজ করার পাশাপাশি মে মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বার কাউন্সিল নির্বাচন তদারকি করার নির্দেশ দেয়া হয় কমিটিকে। অপর দিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেয়া হয়।
এদিকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদানের বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান। পরে একে একে এ প্রসঙ্গে আলোচনায় যোগ দেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, এস এম কামাল হোসেনসহ সভায় উপস্থিত অধিকাংশ নেতারা।
সভায় উপস্থিত ওই নেতারা জানান, কোন তারিখে সংবর্ধনা দেয়া হবে তা নির্ধারণ হয়নি। কারণ আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি সরকারি সফরে লন্ডন, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করবেন। তবে আগামী ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের দিন এ সংবর্ধনা আয়োজনা করা হতে পারে বলেও সভায় আলোচনা হয়।
Advertisement
এইউএ/এএইচ/এমআরএম