শিক্ষা

জাতীয়করণ বিধিমালা ‘বিতর্কিত করছে সরকার’

‘জাতীয়করণ বিধিমালাকে ভৌতিক’ আখ্যা দিয়ে সরকারকে বিতর্কিত করার চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার বিশিষ্টজনরা। কোনো টালবাহানা না করে শিক্ষকদের দ্রুত আত্তীকরণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

Advertisement

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আত্তীকরণ বঞ্চিত ৪২টি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষা-কর্মীদের নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্য ফোরামের সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি উপস্থাপন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- লেখক-গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচর্য, জাতীয়করণ বঞ্চিত শিক্ষক ও শিক্ষা-কর্মী জাতীয় ঐক্যের সদস্য সচিব হারুন-উর রশীদ, জাতীয় ঐক্যের সদস্য ইব্রাহিম খাঁ সরকারি কলেজের প্রভাষক পারভীন আক্তার এবং বাউফল সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মো. বদরুল ইসলাম। সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কবি জসীম উদ্দীনসহ অনেক শিক্ষাবিদের শিক্ষাজীবনে তৃতীয় বিভাগ ছিলো। বর্তমান সরকার যে আত্তীকরণ বিধিমালা করেছে তাতে অনেক শিক্ষকের কর্মজীবন ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে ‘ব্যর্থ’ আখ্যা দিয়ে আবুল মকসুদ আরো বলেন, ‘শিক্ষাজীবনে তিনি ডিগ্রি পাস। তিনি কীভাবে মাস্টার্স পাস শিক্ষকদের যোগ্যতা নির্ধারণ করেন? তার জীবনে প্রশ্নপত্র ফাঁস ছাড়া কোনো অর্জন নেই। তিনি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সহনীয় পরিমাণের ঘুষ গ্রহণের পরামর্শ দেন। তিনি এ পদের জন্য যোগ্য নন। তিনি শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করছেন।’

Advertisement

ফজলে হোসেন বাদশা শিক্ষকদের আত্তীকরণের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘জাতীয় সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। আমরা শিক্ষকদের সব যৌক্তিক দাবির প্রতি সমর্থন জানাই।’

‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাত্র ৩০ মিনিটে আমার নিজের এলাকার কলেজ সরকারিকরণ হয়। এখন সেখানকার কিছু শিক্ষককে আত্তীকরণ করা হয়েছে। পাঁচ বছর পর এসে বাকি শিক্ষকদের আত্তীকরণ করা হচ্ছে না। এটা একটা তামাশা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, ‘ভৌতিক নীতিমালার মাধ্যমে প্রায় ৩০০ শিক্ষককে আত্তীকরণ থেকে বঞ্চিতের পাঁয়তারা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার এ চক্রান্ত দেশের জন্য, শিক্ষকদের জন্য অবমাননাকর।’ জাতীয়করণ বঞ্চিত শিক্ষক ও শিক্ষা-কর্মী জাতীয় ঐক্যের সদস্য সচিব হারুন-উর রশীদ বলেন, সরকার ২০০১ সালে ২০০০ বিধি সংশোধন করে ১৮টি মহিলা কলেজের শতাধিক শিক্ষককে যেভাবে আত্তীকরণ করেছে ওই ৪২ কলেজের ৩০০ শিক্ষককেও সেভাবে আত্তীকরণ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সাল পর্যন্ত সরকারি হওয়া কলেজগুলোর মধ্যে আত্তীকরণ-বঞ্চিত হয় ৪২ কলেজের তিন শতাধিক শিক্ষক, প্রদর্শক ও সহকারী লাইব্রেরিয়ান। ২০০০ সালের বিধিমালার কারণে কলেজ সরকারিকরণ হলেও এসব শিক্ষকরা ক্যাডারভুক্ত হওয়ার সুযোগ-বঞ্চিত হন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

Advertisement

এমএইচএম/এমএআর/এমএস