অসুস্থ বাবাকে দোতলার একটি ঘরে আটকে রেখে বেড়াতে চলে গেছেন পুত্র ও পুত্রবধূ। তালাবন্দি অবস্থায় গত তিন দিন ধরে অনাহারে ছিলেন বৃদ্ধ রবীন্দ্রনাথ রায়।
Advertisement
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের নোয়াপাড়া থানার গারুলিয়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লি এলাকায়। পরিবহণ ব্যবসায়ী সমীর রায় ওরফে কেষ্ট এবং তার স্ত্রী অসুস্থ ওই বৃদ্ধকে ঘরে আটকে রেখেই বেড়াতে চলে গেছেন।
তিনদিন ধরে অনাহারে থাকার পর শেষপর্যন্ত বৃহস্পতিবার সকালে রবীন্দ্রনাথের চিৎকার এবং কান্নার আওয়াজ শুনতে পায় প্রতিবেশিরা। তারাই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে।
বৃদ্ধের কাছ থেকে জানা গেছে, তিনদিন ধরে অভুক্ত অবস্থায় খুব কষ্টে দোতলার ওই ঘরে দিন পার করছিলেন। কিন্তু অনাহারে আর থাকতে না পেরে চিৎকার করতে শুরু করেন।
Advertisement
পড়শিরা তার বাড়ির সামনে জমায়েত হয়ে কী করা যায়, সেটা ঠিক করছিলেন। ওই সময় রবীন্দ্রনাথের বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন সেখানকার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রবীন দাস।
প্রতিবেশিদের কাছ থেকে অমানবিক ঘটনা শোনার পর পাঁচিলের উপর ছোটো একটি মই লাগিয়ে তিনি দোতলায় উঠে ওই বৃদ্ধকে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসেন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছান নোয়াপাড়া থানার পুলিশ। পরে বৃদ্ধকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসা করায় পুলিশ সদস্যরা। প্রাথমিক চিকিৎসার পর রবীন্দ্রনাথের বাড়ির পার্শ্ববর্তী আত্মীয়ের বাড়িতে দেখভালের জন্যে রাখা হয়েছে।
কাউন্সিলর রবীন দাস জানান, তিনদিন ধরে বৃদ্ধ রবীন্দ্রনাথবাবুকে দোতলার ঘরে আটকে রেখে পুত্র এবং পুত্রবধূ বেড়াতে গেছেন। এই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় পড়শিদের ভিড় দেখে দাঁড়িয়ে পড়ি। ওই বৃদ্ধকে দোতলার ঘর থেকে নিচেও নামিয়ে নিয়ে আসি।
Advertisement
কিন্তু তার পুত্র এবং পুত্রবধূকে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, রবীন্দ্রনাথ খুবই অসুস্থ। হাঁটতে পারেন না; এমনকি ঠিকমতো বসতেও পারেন না। তিনদিন ধরে অনাহারে ছিলেন। বাথরুমে পানিও ছিল না।
বর্তমানে তাকে ভাগনির বাড়িতে রাখা হয়েছে। বোনের নামে সম্পত্তি লিখে দেয়ার আশঙ্কায় বৃদ্ধ বাবাকে পুত্র ও পুত্রবধূ আটকে রেখেছে বলে প্রতিবেশিদের অভিযোগ।
যদিও এ ব্যাপারে কাউন্সিলর জানান, শুনেছি সম্পত্তি ছেলের নামে উইল করে দিয়েছেন ওই বৃদ্ধ। বৃদ্ধের দাবি, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। প্রতিবেশিদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, পুত্র এবং পুত্রবধূ তার টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।
কেএ/এমএস