বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণির ডান হাতের রক্তনালীর টিউমার অস্ত্রোপচার শেষে তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়া হয়েছে। আইসিইউতে নেয়ার সময় মুক্তা চোখ খুলেছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক।
Advertisement
অস্ত্রোপচারের পর ড্রেসিং শেষে মুক্তামণিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেয়ার সময় তার বাবা-মা ও স্বজনরা তাকে ডাকলে মুক্তা সাড়া দেয়।
জাতীয় বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ড. সামন্ত লাল সেন বলেন, অস্ত্রোপচারের পর মুক্তামণির জ্ঞান ফিরেছে। আমাদের কথায় সাড়া দিচ্ছে মুক্তা। তার হাতকে রক্ষা করে মাংস কেটে ফেলা সম্ভব হয়েছে। তার হাত ভালো আছে।
মুক্তার বাবা ইব্রাহীম জানান, আইসিইউতে ঢুকেই আমাকে প্রথম ডাকে মুক্তা। আমার কাছ থেকে পানি চায়। পানি দেয়ার পর সে জানায় তার শরীরে এখন অনেক ব্যথা।
Advertisement
শনিবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের দ্বিতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারে মুক্তার অপারেশন শুরু হয়। ২০ সদস্যের বেশি চিকিৎসকদের একটি দল জটিল এই অস্ত্রোপচারে উপস্থিত ছিলেন। তার অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে। বর্তমানে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ৫ নম্বর বেডে আছে মুক্তা।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট মুক্তার ডান হাতের বায়োপসি সম্পন্ন হয়। ৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা জানান, মুক্তার হাতের একাধিক অপারেশনের প্রয়োজন রয়েছে। তার দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা দরকার। একপর্যায়ে তার বাম হাত কেটে ফেলতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনের আগে অবশ্য তার চিকিৎসা নিয়ে বাবা-মার সঙ্গে কথা বলেন চিকিৎসকরা। হাত কাটার আশঙ্কার কথা জানান। উত্তরে মুক্তার বাবা ইব্রাহীম হোসেন ও মা আসমা খাতুন বলেন, আপনারা মুক্তার জীবন রক্ষায় যা যা প্রয়োজন করুন।
সংবাদ সম্মেলনের পর ইব্রাহীম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মুক্তার চিকিৎসা নিয়ে আমরা খুব সন্তুষ্ট। এখানে অনেক বেশি যত্ন নেয়া হচ্ছে যা আগে কোথাও নেয়া হয়নি। ডাক্তারদের উপর আমার ভরসা আছে। জীবন রক্ষার জন্য তারা যা করতে চান এতে আমার কোনো আপত্তি নাই। আমরা শুধু আমাদের মেয়েকে চাই।
Advertisement
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তাকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত ৯ জুলাই জাগো নিউজে ‘লুকিয়ে রাখতে হয় মুক্তাকে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর মুক্তার চিকিৎসা দেয়ার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন।
এআর/এআরএস/আইআই