ভ্রমণ

নওগাঁয় বিনোদনের আস্থা ডানা পার্ক

নওগাঁয় ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ‘ডানা পার্ক’ নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র। নওগাঁ পৌরসভা এলাকার ভবানীপুর গ্রামে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জেলা থেকে বিনোদনের জন্য আসছেন বিনোদনপ্রেমীরা।

Advertisement

নওগাঁবাসীকে সুস্থ, সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে আনন্দ-বিনোদনের লক্ষ্যে ২০১৪ সাল থেকে পার্কের কার্যক্রম শুরু হয়। গ্রামের মধ্যে গড়ে তোলা নিরিবিলি পরিবেশে পার্কটি এখন বিনোদনপ্রেমীদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত প্রতিনিয়ত সপরিবারে পার্কে ঘুরতে আসেন।

পার্কটিতে রয়েছে- দুটি সুইমিং পুল, কমিউনিটি সেন্টার, পিকনিক কর্নার ও পিকনিকের ব্যবস্থা। বাচ্চাদের খেলার জন্য দোলনা, পিচ্ছিল, মইসহ বিভিন্ন রাইডস। আছে একটি পুকুর, সেখানে নৌকায় করে চড়ে ঘুরে বোড়ানো যায়। ভাস্কর্যের মধ্যে হাতি, হরিণ, বাঘ, ক্যাঙ্গারু, ঘোড়া, জিরাফ, বক, পরি ও জলপরি। দেয়ালে লিখনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া কটেজ এবং বাংলো তৈরি করা হচ্ছে। যা অনেকটা শেষের দিকে। এটি চালু হলে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা এসে থাকতে পারবেন। খাবারের জন্য রয়েছে রেস্টুরেন্ট।

ডানা পার্কের প্রধান আকর্ষণ ‘সুইমিং পুল’। এখানে ছোটদের সাঁতার শেখানোর জন্য অভিভাবকরা নিয়ে আসেন। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে এস সব বয়সীরা জলকেলিতে মেতে ওঠেন। যে যার মতো করে সাঁতার কাটা ও লাফালাফি করে সেলফি তোলেন। বিশেষ করে শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুইমিং পুলে প্রচুর লোকজনের সমাগম ঘটে। এছাড়া ঈদ, পূজা ও বিশেষ দিনগুলোতে প্রচুর লোকের আগমন ঘটে।

Advertisement

নওগাঁ জেলাসহ আশেপাশের বগুড়া, নাটোর, জয়পুরহাট ও রাজশাহী থেকেও বিনোদনের জন্য আসে মানুষ। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ জন এবং শুক্রবার প্রায় ২ হাজার জনের মতো বিনোদনপ্রেমী আসে। পার্কটিতে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা, বিভিন্ন রাইডস ১০ টাকা ও সুইমিং পুল ৫০ টাকা।

পার্কের কারণে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। কারণ পার্কের পাশেই কয়েকটি খেলনা সামগ্রী ও বাহারি দোকান গড়ে উঠেছে।

বগুড়ার একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন বুলবুল আহমেদ। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় সপরিবার পার্কে বেড়াতে এসেছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেয়ের ইচ্ছা পার্কে এসে সুইমিং পুলে সাঁতার শেখার। শহরে গোসলের জন্য ভালো পরিবেশের কোন পুকুর নেই। বাচ্চাকে সাঁতার শেখানোর চেষ্টা করছি। খুবই ভালো লাগছে এ পরিবেশ।’

চট্টগ্রাম থেকে বগুড়ার সান্তাহারে বাবার বাড়িতে এসেছেন ইসরাত জাহান ইতি। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুনেছি এখানে একটি সুন্দর পার্ক আছে। এজন্য স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে দেখতে এসেছি। অল্প জায়গায় খুব সুন্দরভাবে বিনোদন কেন্দ্রকে সাজানো হয়েছে।’

Advertisement

স্থানীয় রাজু আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আশেপাশে যে কয়টি বিনোদন কেন্দ্র আছে তার মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে গড়ে ওঠা এ বিনোদন কেন্দ্রটি খুবই ভালো। বিশেষ করে বাচ্চাদের খেলার জন্য অনেক রাইডস আছে। বাচ্চারা খুবই আনন্দ পায়। এখানকার পরিবেশটাও খুব সুন্দর।’

ডানা পার্কের পরিচালক মাসুদ রানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেয়ের নামে পার্কের নামকরণ করা হয়। মানুষের বিনোদনের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ডানা পার্কের সৃষ্টি। আমরা ব্যাপকভাবে সাড়া পেয়েছি। পার্কটিকে আরো বর্ধিত করতে এর পাশে তুলসিগঙ্গা নদীর ধার দিয়ে প্রায় ১৫ বিঘা জমির উপর আরেকটি পার্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে।’

আব্বাস আলী/এসইউ/এমএস