মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেছেন, দেশের ১৪ লাখের বেশি জেলে ডিজিটাল জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। জেলেদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান প্রকল্পের আওতায় তাদের তা দেয়া হয়েছে। পরিচয়পত্র থাকার কারণে জেলেরা সরকারের দেয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।
Advertisement
মঙ্গলবার মৎস্য ভবনের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খান, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. নজরুল আনোয়ার প্রমুখ।
‘মাছ চাষে গড়ব দেশ বদলে দেব বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যের ওপর ভিত্তি করে এবার উদযাপিত হচ্ছে ১৮-২৪ জুলাই সপ্তাহব্যাপী জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০১৭। এই সপ্তাহ যথাযথভাবে পালনের জন্য মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে সংবাদ সম্মেলন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, পোনা অবমুক্তকরণ, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ, ইলেকক্ট্রনিক মিডিয়ায় টক শো প্রচার, মুঠোফোন বার্তা, সড়ক র্যালি, নৌ র্যালি, সেমিনারসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
Advertisement
এই প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, পরিচয়পত্রের মাধ্যমে জেলেদের জীবনমানে পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া মৎস্য সম্পদের উন্নত ও স্থায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এ পরিচয়পত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রকল্পের পরিচালক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের আওতায় ১৬ লাখ ২০ হাজার জেলের তথ্য সংগ্রহ করে পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ লাখ ২০ হাজার ১৮৫ জনকে পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে। অন্যদেরও দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’
তিনি বলেন, প্রকৃত কোনো তালিকা না থাকায় অনেক সময় সুবিধাভোগীরা জেলেদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকেন। এছাড়া নিজস্ব নৌকা না থাকায় উচ্চসুদে জাল ও নৌকা ভাড়া নিয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায়ও মাছ ধরে; ফলে প্রায়ই মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হন অনেক জেলে। পরবর্তীকালে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন। এ অবস্থার উন্নতি ঘটাতে প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। পরে ২০১২ সালের মার্চে জেলেদের ডিজিটাল জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার প্রকল্প শুরু হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সারা দেশের প্রায় সোয়া কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ পেশায় জড়িত। সারা দেশে জেলেদের সংখ্যা নির্ণয় করতে তাদের নিবন্ধন করার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। এর মাধ্যমে উপজেলাভিত্তিক প্রকৃত জেলেদের চিহ্নিত করে একটি তথ্যভান্ডার তৈরি করার পরিকল্পনা থেকে পরিচয়পত্র তৈরির কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়।
Advertisement
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে আমাদের প্রয়োজন ৪২ থেকে ৪৩ লাখ মেট্রিকটন মাছের উৎপাদন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ টার্গেট পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
এফএইচএস/জেএইচ/আরআইপি