ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) ২০১৭-১৯ মেয়াদের নির্বাচন রোববার (১৪ মে) অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। এবার নির্বাচনে সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ প্যানেল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে আশা করছেন সংগঠনটির বর্তমান প্রথম সহ-সভাপতি ও সভাপতি প্রার্থী শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এফবিসিসিআই নির্বাচনকে ঘিরে অনেক বেশি সরগরম বণিকপাড়া। যদিও সমঝোতার মাধ্যমে চেম্বার গ্রুপ থেকে সরকার সমর্থক প্যানেলের ১৮ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে নির্বাচনে ৬০ পরিচালক পদের মধ্যে ১৮টি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।তবে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের এ বছর ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম ও সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ নামে দুটি পৃথক প্যানেলে ৩৬ প্রার্থী নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া ১৮ জনের মধ্যে ১০ জনই বর্তমান মেয়াদের পরিচালক। সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদের প্যানেল লিডার শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। আর ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের সমন্বয়কারী কাজী ইফতেখার হোসেন বাবলু।এফবিসিসিআইয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে দেখা যায়, এবার নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৩৪১ জন। এরমধ্যে ৮১টি চেম্বার থেকে ৪৫৪ জনকে ভোটার করা হয়েছে। অপরদিকে ৩৪০টি অ্যাসোসিয়েশন থেকে ভোটার হয়েছেন ১৮৮৭ জন। গত ২ এপ্রিল এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত ২৩ মার্চ প্রাথমিক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এফবিসিসিআইয়ের সদস্যদের মধ্যে ৬৫টি ‘এ’ ক্যাটাগরির ও ১৫টি ‘বি’ ক্যাটাগরির চেম্বার এবং ‘এ‘ ক্যাটাগরির ৩৭৫টি ও ‘বি’ ক্যাটাগরির ৪টি অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। চলতি মেয়াদে মোট ভোটার ছিল ২ হাজার ২০৬ জন। সে অনুযায়ী আগামী মেয়াদের নির্বাচনে ভোটার বেড়েছে ১৩৫ জন।সভাপতি প্রার্থী শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, দেশের সাধারণ ব্যবসায়ী ও নেতাদের নির্দেশনায় সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ প্যানেল ঘোষণা করেছে। নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে গড়া এ প্যানেলে সব ধরনের ব্যবসায়ীদের সমর্থন রয়েছে। ফলে এ প্যানেল একক সংখ্যাগরিষ্ঠটা পাবে বলে আমি নিশ্চিত। ঐক্য ফোরামের ইফতেখার হোসেন বাবলু বলেন, দেশের সাধারণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের প্যানেল গঠন করা হয়েছে। আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করাই এ প্যানেল ঘোষণার মূল লক্ষ্য। এফবিসিসিআইয়ের সদস্যরা তাদের পছন্দের প্রতিনিধিকে পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা। ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে পরিচালক পদে প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ অ্যাসিড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মোহাম্মদ উল্লাহ পলাশ, অ্যালুমিনিয়াম ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওবায়দুর রহমান, অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মো. শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, বাইসাইকেল মার্চেন্ট, অ্যাসেমবি্লং অ্যান্ড ইম্পোটারস অ্যাসোসিয়েশনের মো. মিজানুর রহমান বাবুল, ব্রেড, বিস্কুট ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতির মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, এগ প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের তাহের আহমদ সিদ্দিক, হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডা. মাহবুব হাফিজ, ইন বাউন্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের এমজিআর নাসির মজুমদার, ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনের ড. কাজী এরতেজা হাসান, মোশন পিকচার্স এক্সিবিউটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কাজী শোয়েব রশিদ, রেলওয়ে স্পেয়ার পার্টস অ্যান্ড এক্সেসরিজ সাপ্লাইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের ফেরদৌস হুদা চৌধুরী, রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ইসহাকুল হোসেন মুকুট, ঋণগ্রহীতা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, স্পেশালাইজড হাইড্রো কার্বন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এনায়েত হোসেন চৌধুরী, ওয়েস্ট পেপার সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের মো. আমির উদ্দিন বিপু, ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব স্মল অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ (নাসিব) হেলেনা জাহাঙ্গীর, প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের মো. রাব্বানী জব্বার ও স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মো. আলি জামান। সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ থেকে অ্যাসোসিয়েশন প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ এগ্রিকালচার মেশিনারিজ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের খন্দকার মঈনুর রহমান জুয়েল, বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসর অ্যাসোসিয়েশনের এসএম জাহাঙ্গীর হোসাইন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউট সোর্সিংয়ের সাফকাত হায়দার, বাংলাদেশ অটো স্পেয়ার পার্টস মার্চেন্ট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবুল আয়েস খান, বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের মুনতাকিম আশরাফ, বাংলাদেশ হার্ডবোর্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের নিজামুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ জুয়েলারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আনোয়ার হোসাইন, বাংলাদেশ লেদারগুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের আমজাদ হোসাইন, বাংলাদেশ পেপার ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের শফিকুল ইসলাম ভরসা, বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্যাকেজিং, রোল ম্যানুফ্যাকচারার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবু মোতালেব, বারবিডার হাবিবুল্লাহ ডন, রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের খন্দকার রুহুল আমিন, সেকেন্ডারি কোয়ালিটি টিনপ্ল্যাট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশেনের নিজামুদ্দিন রাজেশ, সুইয়িং থ্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের আব্দুল হক, ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের হাফেজ হারুন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের শমী কায়সার, আউট সোর্সিং অ্যান্ড লজিস্টিক সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের আবু নাছের, প্রাইভেট রেডিও ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাশেদুল হোসাইন চৌধুরী রনি। এদিকে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২৪টি পদে বড় ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে পরিচালক মনোনয়ন দেয়া হবে। ১৬ মে পরিচালকদের ভোটে সভাপতি, প্রথম সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হবেন। ১৭ মে পরিচালক পদের বিপরীতে আপিল করা যাবে। আর ২০ মে ঘোষণা করা হবে চূড়ান্ত ফলাফল। এর আগে ২৯ জানুয়ারি এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সভায় নির্বাচন বোর্ড ও নির্বাচন আপিল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ড দুটির প্রত্যেকটিতে সদস্য রাখা হয়েছে তিনজন করে। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. আলী আশরাফ। আর নির্বাচন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক জাহাঙ্গীর আলামিনকে। নির্বাচন বোর্ডের অপর দুই সদস্য হচ্ছেন- এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মো. শামসুল আলম এবং অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক কে এম এন মঞ্জুরুল হক। জাহাঙ্গীর আলামিনকে চেয়ারম্যান করে গঠন করা নির্বাচন আপিল বোর্ডের অপর দুই সদস্য হচ্ছে- চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মির্জা আবু মনসুর এবং ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি খায়রুল মজিদ মাহমুদ। এসআই/এমএমএ
Advertisement