সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীর শিল্পনগরী মোসাফফাহ এর ৩৭ নম্বর বাসায় পানি-বিদ্যুৎ ছাড়া মানবেতর জীবনযাপন করেছেন প্রায় শতাধিক বাংলাদেশি শ্রমিক। এরা সবাই কুয়েতি মালিকানাধীন ‘ফিউচার ডেকোর’ নামে একটি কোম্পানির শ্রমিক।পরিবার-পরিজনের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমিরাতে এসে এখন নিজের মুখের হাসি ম্লান করে দেশে ফেরার আশায় বুক বেঁধে আছেন রেমিটেন্স পাঠানো এসব শ্রমিক।তাদের অভিযোগ বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের ক্যাম্পে কয়েকদিন আগে সামান্য পানি আর খাবার দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে আর কোন খবর নেয়া হচ্ছে না। অপরদিকে দূতাবাস বলছে, শ্রমিকদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে তাদের বিষয়টি দেখা হচ্ছে।তিন শতাধিক শ্রমিক নিয়ে ‘ফিউচার ডেকোর কোম্পানিটি’ ভালভাবে চলে আসলেও হঠাৎ দুই বছর আগে উধাও হয়ে যায় মালিকরা। এই কোম্পানিতে বাংলাদেশি শ্রমিক ছিলেন একশ। কোম্পানির মালিক পালিয়ে যাওয়ার পর তারা স্থানীয় আদালতে মামলা করেন।রাস্তায় চলাচলের জন্য আদালত থেকে একটি ছাড়পত্র দিলেও বাহিরে কাজ করার অনুমতি পাননি এসব শ্রমিক। ফলে খাদ্যের অভাবে একজন শ্রমিক মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব শ্রমিকরা বলেন, আমাদের এক সহকর্মী তিনি ভারী কাজ করতে না পারায় ময়লার ড্রাম থেকে স্ক্রাপ কুঁডিয়ে এনে তা বিক্রি করতেন। কিন্তু এই দেশের আইনে তা নিষিদ্ধ হওয়ায় সে কাজও বন্ধ করে দিতে হয়। এর কিছুদিন পর তিনি অনাহারে মারা যান।একদিকে নেই কাজকর্ম অন্যদিকে বাসস্থানে নেই পানি আর বিদ্যুৎ সংযোগ। দীর্ঘদিন বকেয়া বিলের দায়ে আবুধাবীর ওয়াটার ইলেক্ট্রেসিটি বিতরণ বিভাগ এসব শ্রমিকদের বাসস্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ফলে অন্ধকার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করছে এসব প্রবাসীরা। দূতাবাসের বিরুদ্ধে তাদের অনেক অভিযোগ।অভিযোগে তারা বলেন, দূতাবাস আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছে না। ১০-১২ দিন ধরে আমরা অন্ধকারের মধ্যে আছি। দূতাবাসে গেলে তারা শুধু আশ্বাস দেন।কিন্তু দূতাবাসের সচিব ড. মোহাম্মদ মোকছেদ আলী বলেন, আমাদের দূতাবাস এই কোম্পানির শ্রমিকদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছে। তাদের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণালয়ে এই বিষয়টি জানানো হয়েছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।তিনি আরো বলেন, শ্রমিকদের আমরা বলেছি আপনাদের খাদ্যের সমস্যা হলে আমাদের কাছে আসুন আমরা দেব। দেড় বছর আগেও আমরা তাদের বিদ্যুৎ আর পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। হঠাৎ অল্প কিছুদিন আগে বকেয়া বিলের কারণে আবার লাইন কেটে দেয়া হয়। আমরা সেটি সমাধান করার জন্য চেষ্টা করছি।এআরএস/আরআইপি
Advertisement