মগবাজারের লেপ-তোষকের দোকানে তুলা ধুনার কাজ করেন খাদিজা বেগম। সাত বছরের মেয়েকে নিয়ে কারওয়ানবাজার পাইকারি মাছের আড়তের বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। কারওয়ানবাজার থেকে এফডিসিগামী রাস্তায় তখন প্রচণ্ড যানজট। ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় এমনিতেই খানাখন্দ, তদোপরি অনেকেই প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল থামিয়ে ইলিশ কেনায় ব্যস্ত থাকায় রাস্তায় যানজট। মানুষের ভিড় থাকায় খাদিজা সামনে এগোতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে মেয়েকে সিএনজি গ্যাস পাম্পের সামনে দাঁড় করিয়ে এক ইলিশ বিক্রেতার সামনে দাঁড়ালেন। ‘আফা, মাছ নিবেন নাকি? আলুর দামে ইলিশ মাছ। এক্কেবারে সস্তা। হালি মাত্র ১২০০ টাকা।’ দাম শুনে একটু ভড়কে গেলেন খাদিজা। পরে দরদাম করে ৮০০ টাকা হালি হিসেবে ২০০ টাকায় একটি ইলিশ কিনে মেয়ের কাছে আসলেন। ইলিশ দেখে মেয়ের মুখে হাসি। সন্তানের মুখে হাসি দেখে তৃপ্তির হাসি খাদিজার চোখে মুখেও।রাজধানীসহ সারাদেশে ইলিশের প্রচুর সরবরাহ থাকায় এখন উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সবারই ক্রয় ক্ষমতার নাগালে। মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, কারওয়ানবাজারে সাধারণত কাক ডাকা ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত পাইকারি মাছের কেনাবেচা শেষ হয়। সেখানে বিকেল ৪টায় বাজারের বাইরের রাস্তায় হরদম ইলিশের কেনাবেচা। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের এক হালি ইলিশের দাম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। তবে দরদাম করে ওই মাছ ৮০০-১০০০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। এছাড়া বড় সাইজের এক হালি ইলিশ ১০০০০ টাকাও পাওয়া যাচ্ছে। শাহ আলম নামে এক বিক্রেতা জানান, সকালে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাছ কিনে রাখেন। ইলিশের সরবরাহ বেশি থাকায় অনেক পাইকারি বিক্রেতা নির্দিষ্ট অঙ্কের চুক্তিতে মাছ বিক্রির জন্য দিয়ে যাচ্ছেন। শাহ আলম আরো জানান, মাস দুয়েক আগেও যে ইলিশের জোড়া ১৫০০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন সেই মাছ অর্ধেকেরও কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তেজগাঁও এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল হালিম জানান, এক হালি মাছ ৮০০০ টাকায় কিনেছেন। এবারের মতো সস্তায় মাছ গত কয়েক বছরের মধ্যে তিনি কিনতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন। এমইউ/এএইচ/এবিএস
Advertisement