আবাসিক প্লট ও ভবনে থাকা ১২ হাজার ৯৫৭টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দিয়েছে সরকার। নোটিশের জবাব পর্যালোচনা করে সেসব প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। একই সঙ্গে আবাসিক এলাকায় থাকা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন না করার এবং এসব এলাকায় নতুন করে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনে ট্রেড লাইসেন্স না দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে বুধবার সচিবালয়ে ‘নগর এলাকার রাস্তার পাশে আবাসিক প্লট ও ভবনে রেস্তোরাঁ-বারসহ নানাবিধ বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনাজনিত সমস্যা নিরসনে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বিষয়ক’ কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভায় জানানো হয়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আবাসিক এলাকায় থাকা ৩ হাজার ১৫টি, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এক হাজার ১৩৭টি এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) দুই হাজার ৪০০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ করেছে। এছাড়া খুলনা সিটি কর্পোরেশন ২৬টি, গাজীপুর ৩৭৬টি, কুমিল্লা ৪০টি, চট্টগ্রাম ১৫০টি, বরিশাল ৫৮টি, সিলেট ২৬টি এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন পাঁচটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ পাঠিয়েছে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আবাসিক প্লট ও ভবনে থাকা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নোটিশ পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে এই সিটি কর্পোরেশনের একজন প্রতিনিধি জানান। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেস্কো) ৫ হাজার ৫৩৪টি, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ১১২টি এবং ফায়ার সার্ভিস ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ করেছে। সভায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রতিনিধি জানান, তারা ৫১টি বার, ক্লাব ও রেস্তোরাঁকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। ঢাকার ৩৪টি চার ও পাঁচ তারকা হোটেলের বিষয়ে রাজউকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সভায় জানান বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি। শহর এলাকায় আবাসিক প্লট ও ভবন থেকে সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরাতে গত ৪ এপ্রিল ছয় মাস সময় বেঁধে দেয় মন্ত্রিসভা। এই সময়ে বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো না সরালে সেগুলো উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় বারের লাইসেন্স বাতিল করে সেগুলো অপসারণ করতে হবে; নতুন করে কোনো বারের লাইসেন্স দেয়া যাবে না। সব গেস্ট হাউজ ও আবাসিক হোটেল বন্ধ করতে হবে। এদিকে গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনার পর আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে নড়েচড়ে বসেছে সরকার। গুলশানসহ ঢাকার উত্তরের অভিজাত আবাসিক এলাকাগুলোতে এরকম ৫৫২টি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে রেস্তোরাঁ, হোটেল, স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালও রয়েছে বলে জানান রাজউকের চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী। এমইউএইচ/জেএইচ/আরআইপি/এমএফ
Advertisement