ঢাকা উত্তর সিটির যানজট দূরীকরণ, জলবদ্ধতা নিরসন ও ফুটপাতে পথচারীদের হাঁটাচলা সহজ করতে বিভিন্ন সড়ক, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ আগামী দুই বছরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও তা আরো দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার শেরে বাংলানগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় মোট ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আজকের একনেক সভায় ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ২ হাজার ৯৭১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৫৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।তিনি বলেন, ঢাকা মেগাসিটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু শহরের বিদ্যমান রাস্তা, যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিকল্পিত মহানগরীর তুলনায় নিম্নমানের। নগরীর ফুটপাতও চলাচলের জন্য প্রায় অনুপযোগী। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ড্রেনেজ অপ্রতুলতার কারণে মারাত্মক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া যানজট নিরসন এবং ফুটপাতে পথচারীদের হাঁটাচলা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই ১ হাজার ২৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ’ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রকল্পটি ২০১৮ সাল নাগাদ বাস্তবায়ন করবে। তবে জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পটি আরও আগেই শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটির আওতায় রাস্তা উন্নয়ন-২০৪ দশমিক ৮২ কিলোমিটার, ড্রেন নির্মাণ ২৬৭ দশমিক ২৭ কিলোমিটার, ফুটপাত নির্মাণ ১১৯ দশমিক ২৭ কিলোমিটার, প্রশিক্ষণ, পরামর্শ সেবা, ইউটিলিটি লাইন রিলোকেশন ও আনুষঙ্গিক ব্যয়, যানবাহন ক্রয় (জিপ ১টি, ডাবল কেবিন পিক-আপ ২টি, মোটরসাইকেল ১০টি), কম্পিউটার, ফটোকপিয়ার এবং যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র ইত্যাদি ক্রয় করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শহরের যানজট নিরসন, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণসহ পথচারীদের হাঁটার সুবিধা বৃদ্ধি হবে বলে জানান মুস্তফা কামাল। একনেক সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো— বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত), এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। মিলিটারি ফার্ম আধুনিকায়ন প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত), এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। হরিশপুর বাইপাস মোড় থেকে বনবেলঘরিয়া বাইপাস মোড় পর্যন্ত নাটোর শহরের প্রধান সড়কের মিডিয়াসহ পেভমেন্ট প্রশস্থকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফর ইমপ্লিমেন্টেশন অব গজারিয়া ৩৫০ মেগাওয়াট কোল ফায়ার্ড থারমাল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে শাহবাজপুর গ্যাসফিল্ড রক্ষা (২য় পর্যায়) প্রকল্প, দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এছাড়া ২৮১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মোবাইল গেইম ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব তারিক-উল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম, আইএমইডির সচিব ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী এবং শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ প্রমুখ। এমএ/জেএইচ/এমএস
Advertisement