সাহিত্য

আমজাদ হোসেনের দুটি কবিতা

আমজাদ হোসেনের দুটি কবিতা
আমার পুড়ে যাওয়া ছেলে

একটি বাগানের কতগুলো তাজা ফুল ঝরে গেলো,ফোটার আগেই নিঃশেষ হয়ে গেলো পুষ্পকলি।পূর্ণিমার আকাশে এরা ছিল জ্বলজ্বল তারকা,নিমিষেই খসে পড়লো তারা, গগন করে বিদীর্ণ।

Advertisement

যাদের কলকাকলিতে মুখরিত ছিল এই আঙিনা,শহরে নিঃস্তব্ধতার কালিমা মেখে হয়ে গেলো অচেনা।কান্নার আওয়াজ আসে না, তাদের আঁখি যেন মরুভূমি!আচমকা বোবা হয়ে গেলো ব্যস্ততায় ঢাকা এ রাজধানী।

আর বুঝি শোনা যাবে না শিশুটির বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস!আর কে শুধাবে সোনামণির আদরমাখা ডাকে ‘বাবা’?অফিসের ক্লান্তি শেষে বাবা ফেরার অপেক্ষায় কে আর?মায়ের বুকটি খালি, ঘুমপাড়ানি গল্প শুনবে না খোকা।

পৃথিবী বড়ই অদ্ভুত! যে পুষ্প ফুটে জগতে সুবাস ছড়াবে,মাল্য হয়ে গলায় ঝুলবে, সৌন্দর্য বিলাবে আপন ত্যাগে।অঙ্কুরেই হয়ে গেলো বিনাশ, কে ছড়াবে আলো জগতে?যে ভস্মে পোড়ে নিষ্পাপ শিশু, সেখানেই ফুটুক ফুল।

Advertisement

****

স্বর্গের শিশু

পুড়ছে মানুষ মরছে শিশুলাশের শহর ঢাকা,ফুলগুলো সব ঝরে গেলোহৃদয়বাগান ফাঁকা।

কান্নাভরা আর্তনাদেআকাশ-বাতাস ভারী,মা-জননীর আদরের ধনওপার দিলো পাড়ি।

মা যে কাঁদে, বাপ যে কাঁদেকাঁদছে সারাদেশ,হাসিমাখা মুখখানি তোরহলো নিরুদ্দেশ।

Advertisement

স্বর্গের দূত দুয়ারে দাঁড়ায়েবরিবে মেহমান,দুনিয়া যাদের বিদায়বেলায়শোকে মুহ্যমান।

স্বর্গবাসী অধিক খুশিতোদের কাছে পেয়ে।হরেক ফুলের সৌরভেতেগেছে মাতিয়ে।

বেহেশতেরই বাগানভরাতোরা শতক ফুল।ইহজগত তোদের পানেচেয়ে যে ব্যাকুল।

এই জগতে পোড়াগন্ধচুপসে বাতাস বয়।পরপারে সুভ্র ঘ্রাণ আরছড়াও জ্যোতির্ময়।

এসইউ/জেআইএম