কোনো বিষয়ে আপনি খুবই স্বল্প জানেন বা সীমাবদ্ধ জানেন, এটা হতেই পারে মোটেই দোষনীয় কিছু নয়, আমরা কেউই সবজান্তা নই (আমি কারাতে, কুস্তি, বক্সিং নিয়ে কিছুই জানি না) কিন্তু আপনি যতটুকু জানেন তার থেকে বেশি অন্য কেউ জানবেন না বা আপনার জানাটাই সর্বশেষ এমন ভাবাটা বিরাট ভুল! এমন অন্ধকারাচ্ছন্ন চিন্তা ভাবনা থেকে বের হয়ে আসুন।
Advertisement
অর্থবান মানুষ মাত্রই যেমন সবসময় অসুখী নন, তেমনি দরিদ্র মানুষ মাত্রই সুখী নয়। সুখ মনের একটি আপেক্ষিক অবস্থা যা যে কোনো বিত্তের মানুষের মাঝেই বিদ্যমান। প্রচুর অর্থবান সুখী মানুষ আছেন, যারা জানেন কোন সময় অর্থ কোন খাতে খরচ করতে হয়, কোন খাতে খরচ বন্ধ রাখতে হয়, তারা জীবন আর অর্থের মাঝে সামঞ্জস্য রেখে সুখে থাকেন আবার অনেক ধনী মানুষ আছেন ভয়ংকর অশান্তিতে থাকেন, অর্থ আছে সুখ নাই।
এনারা জীবনের লাগাম ঠিকসময়ে টেনে ধরতে পারেননি, পরবর্তীতে এরে খোঁচা, ওরে হিংসা করে জীবন পার করেন। দুনিয়ায় অনেক দরিদ্র মানুষ আছেন, খুবই অল্প আয়ে ভীষণ সুখী, চাওয়া পাওয়া হিংসা নাই আবার অনেক দরিদ্র মানুষ আছেন নিজের স্বভাবের কারণে সারাক্ষণ অভাব আর অশান্তিতে থাকেন। অর্থ বিত্ত সুখ পরিমাপক যন্ত্র নয়।
বয়সে বড় হলেই জ্ঞানী, সম্মানিত, আর বয়স কম হলেই কিছু জানেন না এটা সমাজে প্রচলিত একটি ভয়ংকর কুসংস্কার যা জীবনে ঘোঁটা পাকানো ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারেননি এমন বয়স্কদের দ্বারা প্রচলিত। আপনি কিছু জানেন, না কি জানেন না সেটা আপনার জানার আগ্রহ এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে। আপনার বয়স কত তার ওপর নয় কিছুতেই। এ বিষয়ে ভরি ভরি উদাহরণ আছে... কাকে ছেড়ে কার নাম বলবো ? সম্মান মানুষ তার জ্ঞান, ব্যক্তিত্ব ও বিচক্ষণতার জন্য পায়, বয়সের জন্য নয়।
Advertisement
সবসময় সব লম্বা মানুষই কিন্তু ভালো বাস্কেটবল খেলেন না, কেউ কেউ ভালো লং টেনিস খেলেন, কেউ কেউ ভালো সাঁতারু হন, কেউ ভালো সাইকেল চালান হয়ত আবার কেউ এগুলোর কোনো কিছুই পারেন না। কারণ আগ্রহ নেই তিনি হয়ত বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক বই পড়তে পছন্দ করেন, যেটায় যার আগ্রহ। শারীরিক অবয়ব দিয়ে কারো বিদ্যা বুদ্ধি বিচার করা ঠিক না।
ধৰ্মীয় পোশাক পরিহিত ব্যক্তি ধৰ্ম নিয়ে যা যা বলে বেড়ান সেসব কিন্তু সব সময় সঠিক হয় না যদি তিনি সেই বিষয়ে পরীক্ষিত বিজ্ঞ না হন। আবার খুব সাধারণ মানুষের নিজ আগ্রহ থেকে জানা ধর্মীয় পড়াশোনা লদ্ধ জ্ঞান অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক হয়। কারণ সে নিজ আগ্রহে নিজে জানার জন্য পড়েছে, এখানে তিনি গাফিলতি করবেন না কারণ তার পাশ মার্কের প্রয়োজন নেই।যিনি নিজে জানার জন্য পড়েন তিনি কখনো ভুল বলেন না। ধর্ম পালন, ধারণ এবং লালন সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।
ঠিক তেমনি নিজ অভিজ্ঞতা, চোখের দেখা, পড়াশোনা, যোগাযোগ ও বিচক্ষণতা বা দূরদর্শিতা থেকে পাওয়া উপলব্ধি বাস্তব জীবনে বেশি কাজে আসে, উড়ো উড়ো ভেসে আসা তথ্যের চেয়ে। এই একই উদাহরণ শুধু খেলাধুলা বা ধৰ্ম নিয়ে নয়, পরিবার, প্রতিবেশী, আত্মীয়, সমাজ, রাজনীতি, বৈদেশনীতি, সমরনীতি, কূটনীতি, মানুষনীতি সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
পৃথিবী ও মহাবিশ্বের যে কোনো বিষয়ের খবর, তথ্য, জ্ঞান মানুষ যার যার ব্যক্তিগত আগ্রহ অনুযায়ী সংগ্রহ করে থাকে। সবাই যেমন সব বিষয়ে পারদর্শী হয় না তেমনি অন্য যে কোনো কেউ যে কোনো বিষয়ে আপনার চেয়ে বেশি জানতেই পারে কিন্তু সে কীভাবে জেনেছে সেই বিষয়ক ব্যাখ্যা সে আপনাকে দিতে বাধ্য নয় কিছুতেই।।
Advertisement
তাই কাউকে কোনো বিষয়ে চার্জ করার আগে ভদ্রতার সীমারেখা জানা থাকা জরুরি, সবাই আপনার গাঁজা খাওয়ার পার্টনার না যে জিজ্ঞাসা করা মাত্র উগলে দেবে।
এমআরএম/জিকেএস