জুলাই সনদের ঘোষণাপত্রে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। এ সনদে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের আলোচনায় নির্বাচন প্রক্রিয়া, সংবিধান, মৌলিক অধিকার তথা রাজনীতি নিয়ে বেশি আলোচনা হলেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের প্রতিফলন ঘটাতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি জুলাই সনদে যুক্ত হবে।
Advertisement
জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যে কোনো সনদে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরা হয়। বর্তমানে আলোচনাটা মূলত রাজনীতির ক্ষেত্রে হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে স্বাস্থ্য, অর্থ ও শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে মৌলিক রাজনৈতিক আলোচনার বিষয়। যেহেতু এখানে শিক্ষা সংস্কার ব্যাপারটা নেই সেজন্য আমরা মনে করছি যে এবারের যে ইলেক্টোরাল প্রসেস এবং গভারনেনস সম্পর্কিত যে সংস্কার, এ সবগুলো স্বাস্থ্যের মাধ্যমে দৃশ্যমান বা অনূদিত হবে। কারণ বাকিগুলো সব নির্বাচন প্রক্রিয়া, সংবিধান, মৌলিক অধিকার এ ধরনের বিষয়।
কিন্তু একেবারেই সত্যিকার অর্থে যে রাষ্ট্রে কল্যাণমুখী প্রবণতা সৃষ্টিতে দৃশ্যমান সেবা বা একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে সেটা স্বাস্থ্যের মাধ্যমে প্রতিফলিত হবে। সে কারণে সনদে স্বাস্থ্যের বিষয়টি প্রতিফলন যেন ঘটে সে প্রচেষ্টা চলছে তিনি জানান।
Advertisement
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে জুলাই সনদ, সংবিধান ও আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে।
আর মাত্র একদিন পরই শুরু হচ্ছে ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের জুলাই মাস। গত বছরের (২০২৪) এই মাসে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল।
পরবর্তীতে ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের রাষ্ট্রভার গ্রহণ করে। নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে ১১টি বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠিত হয়। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সদস্যরা এরই মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত ৭ সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে তাদের প্রস্তাবনা প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রস্তাবনাগুলো চূড়ান্ত ও নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে কাজ করছে।
Advertisement
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাসেই জুলাই সনদ ঘোষণা করা হবে।
জুলাই মাস আর দুদিন পর শুরু হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জুলাই সনদ কবে ঘোষণা করা হবে আর জুলাই সনদের ঘোষণাপত্রে কী কী থাকছে?
গত ৬ জুন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই মাসেই একটি ‘জুলাই সনদ’ জাতির সামনে উপস্থাপনের আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।
তার বর্ণনায়, এই জুলাই সনদ হলো একটি প্রতিশ্রুতি। একটা জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকে রাজনৈতিক দলগুলো যে কটিতে একমত হয়েছে, তার তালিকা থাকবে এই সনদে। জুলাই সনদে সই করে তারা জাতির কাছে সেগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে।
এমইউ/এমআইএইচএস/জেআইএম