দেশজুড়ে

ফুটপাতে দোকান, সড়কজুড়ে পার্কিং

ফুটপাতে দোকান, সড়কজুড়ে পার্কিং

উত্তরের জেলা নীলফামারীর সৈয়দপুর শিল্প-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ একটি উপজেলা। আয়তনে ছোট হলেও প্রায় তিন লাখ মানুষ বাস করে। এখানে দিন দিন শিল্প-বাণিজ্যের প্রসার যেমন ঘটছে, তেমন বাড়ছে লোকসংখ্যা ও যানবাহন। শহরে যানজট সমস্যা এখন পৌরবাসীর নিত্যদিনের ভোগান্তির কারণ।

Advertisement

ফুটপাত দখলের বিরুদ্ধে পৌর কর্তৃপক্ষ অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করলেও এক ঘণ্টা পরই পূর্বের চিত্র ফিরে আসে। ফলে যানজট পরিস্থিতি অনেকটাই অনিয়ন্ত্রিত। ট্রাফিক পুলিশও বাঁশি বাজিয়ে হাঁপিয়ে উঠছে।

শহর ঘুরে দেখা যায়, শহীদ ডা. জিকরুল হক, শহীদ ডা. শামসুল হক ও শেরে বাংলা সড়কের ফুটপাত দখল করে হকাররা সারি সারি দোকান বসিয়েছে। ফুটপাতের পাশেই অর্ধেক সড়কজুড়ে অবৈধ পার্কিং। একই অবস্থা পোস্ট অফিস মোড় ও ২নং রেল গুমটির সামনেও। রাস্তা দখল করে কাপড়, শরবত ও ফলের দোকান বসিয়ে সারাবছরই চলে বেচাকেনা। এছাড়া প্রধান সড়কেই রেস্তোরাঁর পার্কিং অঞ্চল করেছেন অনেক ব্যবসায়ী।

শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে রেলওয়ের জায়গায় অসংখ্য বহুতল মার্কেটও গড়ে উঠেছে। কিন্তু পার্কিংয়ের জন্য সামান্য জায়গাও রাখা হয়নি। অথচ মার্কেটগুলোতে ব্যাংক-বীমাসহ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কেনাবেচা চলছে। ফলে বাধ্য হয়ে গ্রাহকরা তাদের ব্যক্তিগত যানবাহন সড়কে রেখেই কেনাকাটা করছেন। তবে এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি দায় চাপাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ ও পৌর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সৈয়দপুর ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুল ইসলাম বলেন, আমাদের জনবল সংকট ও পৌর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার অভাবে শহরকে যানজটমুক্ত করা যাচ্ছে না। কারণ ফুটপাত দখলের বিষয়টি ট্রাফিক বিভাগ দেখে না। এরপরও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে উপজেলা প্রশাসনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। খুব শিগগিরই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শাহ হোটেল নিরিবিলি ভবনের মালিক প্রদীপ কুমার জানান, তিনি নকশা অনুমোদনের জন্য পৌরসভায় গিয়েছিলেন। কিন্তু রেলের জায়গা নিয়ে বিরোধ থাকার কারণে পৌরসভা নকশা অনুমোদন দেয়নি।

নকশা ছাড়াই তিনতলা ভবন নির্মাণের সময় পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো বাধা দিয়েছে কি না জানতে চাইলে বলেন, অন্যরা যেভাবে ম্যানেজ করে, আমিও ঠিক সেইভাবেই করেছি।

হোটেল করেছেন অথচ পার্কিং অঞ্চল কেন রাখেননি এমন প্রশ্নের সাফ উত্তর দিলেন, যারা খেতে আসবে ব্যক্তিগত যানবাহন কোথায় রাখবে এটা তাদের ব্যাপার। এ নিয়ে কোনো মামলা, জরিমানা হলে আমার কেন হবে?

Advertisement

অপরদিকে চাঁদা দিয়ে দোকান বসানো হয় বলে দাবি করেন পোস্ট অফিস মোড়ের ফুটপাতের শীতবস্ত্র ব্যবসায়ী শেখ নোমান।

তিনি বলেন, আমরা ফুটপাতে ব্যবসা করলেও কয়েকটি পক্ষকে তাদের চাহিদা মতো টাকা দিয়েই ব্যবসা করতে হচ্ছে। তারপরও যখন তখন আমাদের উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়। তাই আমাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গায় হকার্স মার্কেট নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

সৈয়দপুর পৌরসভায় প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ওপর থেকে ভাসমান দোকান ও অবৈধ অবকাঠামো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে যতই বাধা আসুক, অভিযান চলবে। যদি কেউ এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএ/এএসএম