ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড ও অরেঞ্জ কর্নারস বাংলাদেশ যৌথভাবে ‘ইকোসিস্টেম ইন অ্যাকশন: পাওয়ারিং ফিউচার বিল্ডারস” শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সোমবার (২৩ জুন) ঢাকার একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
Advertisement
অনুষ্ঠানে অরেঞ্জ কর্নারস বাংলাদেশের সহায়তা পাওয়া তরুণ উদ্যোক্তা, বেসরকারি খাত, সরকার, দূতাবাস এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা তরুণদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও ব্যবসায় আরও সহায়তা ও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে একত্র হন।
তরুণ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগকারী, করপোরেট নেতৃত্ব ও উদ্যোক্তা সহায়তাকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পান। এতে করে তারা ভবিষ্যতে বিনিয়োগ, পরামর্শ ও বাজারে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় যোগাযোগ গড়ে তুলতে পেরেছেন।
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল একটি আলোচনা পর্ব, যেখানে অংশ নেন বিকাশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কামাল কাদীর এবং ইউনিলিভারের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ আখতার। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন সাজিদা ফাউন্ডেশনের ইমপ্যাক্ট পার্টনার্স বিভাগের প্রধান সারা ইকবাল।
Advertisement
আলোচনায় উঠে আসে নেতৃত্ব, ব্যবসার প্রবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে উদ্যোক্তা হিসেবে টিকে থাকার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ। কীভাবে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও অংশীদারদের সঙ্গে আস্থা গড়ে তোলা যায়, অনিশ্চয়তা সামলে পথ খুঁজে নেওয়া যায় এবং কীভাবে বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় একটি ইতিবাচক প্রভাব তৈরিকারী ব্যবসাকে বৃহৎ পরিসরে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব- এসব বিষয়ে বক্তারা বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। তিনি বলেন, সরকার, বেসরকারি খাত, উদ্যোক্তা ও উদ্যোক্তা সহায়ক সংগঠনগুলোর একসঙ্গে কাজ করাই বাংলাদেশকে তার পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে।
দেশের টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তরুণ উদ্যোক্তাদের ভূমিকা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে উল্লেখ করে লুৎফে সিদ্দিকী জানান, অরেঞ্জ কর্নারসের মতো উদ্যোগগুলো দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক লক্ষ্য ও তরুণ উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে মানানসই।
সমাজের উপকারে আসে এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে- এমন সমাধান তৈরি করার জন্য অরেঞ্জ কর্নারসের উদ্যোক্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান তিনি। তাদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগকে প্রশংসা করেন।
Advertisement
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কারস্টেন্স বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণরা নতুন ভাবনায় ভরপুর, প্রযুক্তিবান্ধব এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানের আগ্রহে এগিয়ে আসছে, যা দেশের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে শুধু মেধা আর আগ্রহই যথেষ্ট নয়। স্টার্টআপগুলো একা একা বড় হতে পারে না, তাদের বিকাশের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ বা ইকোসিস্টেম প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘নেদারল্যান্ডস অরেঞ্জ কর্নারস কর্মসূচি চালু করেছে, যাতে বেসরকারি খাতকে সঙ্গে নিয়ে এমন একটি সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা যায়, যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ের উদ্যোক্তারা বেড়ে উঠতে পারে। বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রতিষ্ঠিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে অভিজ্ঞতা, পুঁজি, নেটওয়ার্ক এবং সাপ্লাই চেইনের মতোপ্রয়োজনীয় উপাদান। তাছাড়া তারা এই নতুন উদ্যোগগুলোর প্রথম ক্রেতাও হতে পারে, যার ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি সবার জন্য লাভজনক এক পরিস্থিতিতে পরিণত হতে পারে।”
ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ আখতার বলেন, ‘ইউনিলিভারে আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের তরুণদের পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে একটি আরও টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল ভবিষ্যৎ গঠনে তাদের নেতৃত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। অরেঞ্জ কর্নারসের সঙ্গে আমাদের এই অংশীদারত্ব একটি কৌশলগত বিনিয়োগ, যা উদ্দেশ্যনির্ভর উদ্যোক্তাদের সহায়তা উদ্ভাবন ও সহযোগিতার মাধ্যমে বাস্তব সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করছে। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ব্যবসাগুলো তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও দৃঢ় মনোভাবের বাস্তব উদাহরণ, যা দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি, এ উদ্যোগগুলোর পেছনে বেসরকারি খাতের সক্রিয় ভূমিকা থাকা জরুরি, আর ইউনিলিভার সেই ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের পাশে থাকতে প্রস্তুত, যারা বাংলাদেশ এবং তার বাইরেও আগামী প্রজন্মের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতেসক্ষম।’
বিএ/এমএস