গুম-খুনের অভিযোগে করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৪ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৪ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম ও প্রসিকিউটর আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
এর আগে এ মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও দুই মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়। এরপর ২৪ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। এ নিয়ে তিন দফায় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ানো হলো।
Advertisement
এ মামলার ১১ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত চারজনের নাম প্রকাশ করেছে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)। শেখ হাসিনা ও জিয়াউল ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এ মামলার আসামি। মামলায় মাত্র একজন গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি জিয়াউল আহসান। তাকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, র্যাব-১ ও র্যাব-২-এর কার্যালয় এবং কচুক্ষেতে গুমকেন্দ্রের সন্ধান পেয়েছেন। সেগুলো তিনি পরিদর্শন করেছেন এবং আলামত জব্দ করেছেন। কিছু কিছু আলামত ধ্বংস করারও চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, ৮০০ থেকে ৯০০টি গুমের ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে ২০০টির মতো ঘটনার তদন্ত শেষের দিকে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০০ জনের বেশিকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
গুমের কাজ গোপনে করা হতো উল্লেখ করে এই আইনজীবী বলেন, এ জন্য তদন্ত করতে সময় লাগছে। এরপর তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও দুই মাস বাড়ানোর আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
Advertisement
আদেশের পর প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তৃতীয় যে মামলাটির শুনানি হয় সেটি হলো গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই মামলাটি আমরা ১১ জনের বিরুদ্ধে শুরু করেছিলাম। মামলায় মাত্র একজন গ্রেফতার আছেন। তিনি হলেন সাবেক মেজর জেনারেল জিয়াউল হাসান। শত শত গুমের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কয়েকটি অভিযোগের তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তারপরও আমরা আদালতের কাছে তিন মাস সময় চেয়েছিলাম। আদালত সেটিও মঞ্জুর করেছেন। এ সময়ের মধ্যে গুমের অভিযোগগুলোর বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
এফএইচ/বিএ/এএসএম