রংপুরের বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে চালের দাম। সেইসঙ্গে দাম বেড়েছে কিছু সবজি ও পাকিস্তানি সোনালি মুরগির। তবে দাম কমেছে পোলট্রি মুরগির ডিমের। এছাড়া মাছ, মাংস, ডাল, আটা, ময়দা তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রংপুর নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় খুচরা বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৪-৫ টাকা।
চালের মধ্যে গুটি স্বর্ণা (মোটা) ৪৮-৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২-৫৪ টাকা, স্বর্ণা (চিকন) বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকা, বিআর২৮ ৬০-৬৫ টাকা থেকে বেড়ে ৭০-৭৫ টাকা, জিরাশাইল ৬৮-৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৭২-৭৫ টাকা, মিনিকেট ৮০-৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ৮৫-৯০ এবং নাজিরশাইল ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সিটি বাজারের চাল বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, এখন ধান- চালের ভরা মৌসুম। এসময় দাম কম থাকার কথা। কিন্তু গত সপ্তাহের তুলনায় হঠাৎ প্রায় সব ধরনের চালের দাম প্রতিকেজিতে ৪-৫ টাকা করে বেড়েছে।
Advertisement
এদিকে মুরগির বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের মতো ১৫০-১৬০ টাকা বিক্রি হলেও পাকিস্তানি সোনালি মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া পাকিস্তানি (হাইব্রিড) ২৩০-২৪০ টাকা থেকে বেড়ে ২৬০-২৮০ এবং দেশি মুরগি আগের মতো ৫৫০-৫৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গরুর মাংস অপরিবর্তিত ৭২০-৭৫০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১০০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
লালবাগ বাজারের মুরগি বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, আমদানি ও চাহিদার ওপর দাম ওঠানামা করে। সোনালি মুরগির চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, পোলট্রি মুরগির ডিমের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য কমেছে। পাইকারি বাজারে পোলট্রি মুরগির ডিমের হালি ৩৫-৩৬ টাকা বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৪২ টাকা।
Advertisement
এদিকে সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি টমেটো ৭০-৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১০-১২০ টাকা, গাজর আগের মতোই ১৮০-২০০ টাকা, কাঁকরোল আগের মতো ৩৫-৪০ টাকা, ঝিংগা দাম বেড়ে ২৫-৩০ টাকা থেকে হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা, চালকুমড়া (আকারভেদে) ২৫-৩০ টাকা, কাঁচকলা গত সপ্তাহের মতো ২৫-৩০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিকেজি সজনে ৮০-৯০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০-১২০ টাকা, চিকন বেগুন আগের মতো ৩৫-৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ও পটল ২৫-৩০ টাকা, বরবটির দাম বেড়ে ৩০-৪০ টাকা থেকে ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে আগের মতোই ৩৫-৪০ টাকা, শসা ৩৫-৪০ টাকা, করলার দাম বেড়ে ৩০-৩৫ টাকা থেকে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা, লাউ (আকারভেদে) ২৫-৪০ টাকা, কচুরলতি ৩০-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০-৫০ টাকা, কচুমুখী ৪০-৫০ টাকা, লেবুর হালি ১০-১৫ টাকা, ধনেপাতার দাম বেড়ে ৮০-১০০ টাকা থেকে হয়েছে ২৮০-২০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ৩০-৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০-৫০ টাকা, পেঁয়াজ আগের মতো ৫০-৫৫ টাকা, আদা ১২০-১৪০ টাকা, দেশি রসুন ১২০-১৪০ টাকা, শুকনো মরিচ ৩৫০-৪০০ টাকা এবং সব ধরনের শাক ১০ থেকে ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের মতোই ১৮-২০ কেজি দরে বিক্রি হলেও দাম বেড়েছে শিল আলুর। প্রতি কেজি শিল আলু ৪৫-৫০ টাকা, ঝাউ আলুর দাম বেড়ে ৩০-৩৫ টাকা থেকে হয়েছে ৪০-৫৫ টাকা, দেশি সাদা এবং বগুড়ার লাল পাগড়ি আলু ২৫-৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুলাটোল আমতলা বাজারের সবজি বিক্রেতা হেলাল মিয়া বলেন, বৃষ্টিতে বাজারে সবজির আমদানি কমে গেছে। এ কারণে কিছু সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল আগের মতো ১৯০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মসুর ডাল (চিকন) আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা, মাঝারি ১০০-১১০ টাকা, মুগডাল ১৬০-১৮০ টাকা, বুটের ডাল ১২০-১৩০ টাকা, চিনি ১১৫-১২০ টাকা, ছোলাবুট ১০০-১১০ টাকা, প্যাকেট আটা ৫০-৫৫ টাকা, খোলা আটা ৪০-৪৫ টাকা এবং ময়দা ৬৫-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতোই আকারভেদে রুইমাছ ২৮০ থেকে ৩৮০ টাকা, মৃগেল ২৪০-২৬০ টাকা, কারপু ২২০-২৫০ টাকা, পাঙাস ১৫০-১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০ টাকা, কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-১৮০ টাকা, শিং ৩০০-৪০০টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২৬০ টাকা এবং গছিমাছ ৮০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জিতু কবীর/এমএন/জেআইএম