জাতীয়

ট্রাফিক পুলিশদের ‘নীরব ঘাতক’ ঢাকার বায়ুদূষণ

ট্রাফিক পুলিশদের ‘নীরব ঘাতক’ ঢাকার বায়ুদূষণ

ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৯টা। রাজধানীর ব্যস্ততম পয়েন্ট মগবাজার মোড়ে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের সদস্য মো. শামিম। চারপাশে গণপরিবহনের কালো ধোঁয়া, হর্নের শব্দে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস। নাকে-মুখে মাস্ক নেই। পাঁচ বছর ধরে তিনি ট্রাফিক বিভাগে আছেন, কিন্তু কখনোই স্বাস্থ্য পরীক্ষারও সুযোগ পাননি।

Advertisement

‘সারাদিন সিগন্যাল দিতে দিতে মাথা ঘোরে, মাঝে মাঝে চোখ জ্বলে, বুকে সমস্যা। যানবাহনের ধোঁয়া সরাসরি নাক দিয়ে প্রবেশ করছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে। কিছুদিন হলো নেবুলাইজার মেশিনও নিয়েছি’- বলছিলেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য শামিম। শুধু শামিম নন, ঢাকা শহরের বহু ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বায়ুদূষণে এমন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।

সম্প্রতি ‘বায়োমেড সেন্ট্রাল পাবলিক হেলথ (বিএমসি পাবলিক হেলথ)’ নামের আন্তর্জাতিক জার্নালে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ‘ঢাকা শহরের ট্রাফিক পুলিশদের মধ্যে বায়ুদূষণ সম্পর্কিত জ্ঞান, মনোভাব ও অভ্যাসের মূল্যায়ন’ শীর্ষক এ গবেষণাটি পরিচালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সভাপতি, সহযোগী অধ্যাপক ও এয়ার কোয়ালিটি, ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ ল্যাবের প্রধান ড. সাখাওয়াত হোসেন।

সারাদিন সিগন্যাল দিতে দিতে মাথা ঘোরে, মাঝে মাঝে চোখ জ্বলে, বুকে সমস্যা। যানবাহনের ধোঁয়া সরাসরি নাক দিয়ে প্রবেশ করছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে। কিছুদিন হলো নেবুলাইজার মেশিনও নিয়েছি।- ট্রাফিক পুলিশ সদস্য শামিম

Advertisement

ওই গবেষণায় ঢাকার বিভিন্ন ট্রাফিক জোনে কর্মরত ৪০১ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাদের ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির সমস্যায় ভুগছেন, ৩৮ দশমিক ২ শতাংশ হৃদরোগে আক্রান্ত আর ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ চোখের সমস্যা বা অন্যান্য দৃষ্টিজনিত সমস্যার শিকার।

গবেষণার ফলাফল অনুসারে, তাদের গড় জ্ঞান ছিল ৮৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ সঠিক, যা নির্দেশ করে যে বায়ুদূষণ সম্পর্কে তাদের মৌলিক জ্ঞান মোটামুটি ভালো। তবে মনোভাব ছিল ৬১ দশমিক ৪৪ শতাংশ সঠিক এবং অভ্যাস ৬৯ দশমিক ১৯ শতাংশ সঠিক, যা ইঙ্গিত করে তাদের সুরক্ষামূলক অভ্যাস এবং দৃষ্টিভঙ্গির আরও উন্নতি প্রয়োজন।

ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত দূষণের সংস্পর্শেগবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানীর সড়কে দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা শ্বাসযন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ এবং চোখের সমস্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন। যানবাহনের সংখ্যা বাড়ায় বায়ুদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করছে। যার প্রধান ভুক্তভোগী ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। কারণ, তারা দীর্ঘ সময় ধরে সরাসরি রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন এবং নিয়মিত দূষণের সংস্পর্শে থাকেন।

আরও পড়ুন

Advertisement

ব্যস্ত সড়কে ট্রাফিক পুলিশই বেশি ঝুঁকিতেগরমে স্বস্তির জন্য নেকব্যান্ড ফ্যান পেলো ট্রাফিক পুলিশ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, এ ধরনের দূষণ দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুসের ক্যানসার, সিওপিডি (যে রোগে ফুসফুসে বায়ু চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়) এবং অন্যান্য জটিল রোগের জন্ম দেয়। বিশেষত যানবাহনের ধোঁয়ায় থাকা উদ্বায়ী জৈব যৌগ, স্থগিত কণা (পিএম বা পার্টিকুলেট ম্যাটার), নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার অক্সাইড ও কার্বন মনোঅক্সাইড—এসবই ট্রাফিক পুলিশের শ্বাসযন্ত্র ও হৃদযন্ত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

আমাদের শরীরের যে অংশটুকু ঢাকা থাকে না, বাসায় গেলে বোঝা যায় সেখানে কী পরিমাণ ধুলো লেগে আছে। অথচ ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই ধুলো আমরা নাক-মুখ দিয়ে নিশ্বাসের সঙ্গে নিচ্ছি। চেষ্টা করি সতর্ক থাকার। কিন্তু কতক্ষণ আর মাস্ক পরে থাকা যায়।- ট্রাফিক সার্জেন্ট সাজ্জাদ হোসেন

গবেষণা অনুযায়ী, এই দূষণের স্থায়ী সংস্পর্শ ট্রাফিক পুলিশদের কর্মদক্ষতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

রাজধানীর ওয়ারলেস মোড়ে কথা হয় ঢাকা মহানগরের ট্রাফিক সার্জেন্ট সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে। জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণের কারণে আমাদের প্রত্যেকের ভবিষ্যৎ জীবন ঝুঁকিতে। আমি চাকরিতে যোগদান করেছি এক বছর হলো। এই অল্প সময়ের অভিজ্ঞতা বলছে, ফিল্ডে কাজ এবং এক জায়গায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজের মধ্যে অনেক পার্থক্য।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের শরীরের যে অংশটুকু ঢাকা থাকে না, বাসায় গেলে বোঝা যায় সেখানে কী পরিমাণ ধুলো লেগে আছে। অথচ ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই ধুলো আমরা নাক-মুখ দিয়ে নিশ্বাসের সঙ্গে নিচ্ছি। চেষ্টা করি সতর্ক থাকার। কিন্তু কতক্ষণ আর মাস্ক পরে থাকা যায়।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন—‘নীরব ঘাতক’ ঢাকার এই বায়ুদূষণকে মানবদেহের জন্য ‘নীরব ঘাতক’ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যারা নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেন, সেই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের প্রতি রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব আরও বেশি। বায়ুদূষণের এই নীরব হুমকিকে আর উপেক্ষা করলে শুধু ব্যক্তি নয়, পুরো কর্মপরিবেশ, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং নগর ব্যবস্থাপনাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকায় ট্রাফিক পুলিশদের দূষণের মধ্যে কাজ করতে হয় টানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এটি ধীরে ধীরে তাদের স্বাস্থ্যকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। রাস্তার পরিবেশ অনুযায়ী উনাদের সবসময় এন-৯৫ মাস্ক পরা উচিত। তাহলে দূষণের প্রভাব অনেকটা কম পড়বে তাদের ওপর। একই সঙ্গে আমাদের নীতি নির্ধারকদের উচিত দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া। শুধু ট্রাফিক পুলিশ নয়, ঢাকার রাস্তায় থাকায় প্রত্যেক পেশাজীবীর জন্য বায়ুদূষণ প্রাণঘাতী। তাই যারা দীর্ঘসময় রাস্তায় থাকে তাদেরও সতর্ক হওয়া উচিত।’

ট্রাফিক পুলিশদের ক্ষতি করছে যানবাহনের ধোঁয়াগবেষণাটিতে দেখা গেছে, ৮৪ দশমিক ৭ শতাংশ ট্রাফিক পুলিশ যানবাহনের কালো ধোঁয়াকে দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এছাড়া বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র ক্যাপস ঢাকায় বায়ুদূষণের পাঁচটি উৎস চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যেও যানবাহনের ধোঁয়া অন্যতম।

ঢাকার ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা পেশাগত কারণেই বায়ুদূষণে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। যানবাহনের ধোঁয়া এবং অন্যান্য বায়ুদূষণের উৎসের সরাসরি সংস্পর্শে থাকার ফলে তারা মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।- অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন

ক্যাপস বলছে, ঢাকায় বায়ুদূষণের জন্য বিশেষ করে নির্মাণকাজ ও যত্রতত্র নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, কলকারখানা ও গাড়ির ধোঁয়া, ইটভাটার ধোঁয়া এবং যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলা অন্যতম কারণ। এগুলো বন্ধ করতে পারলে দূষণ কমানো সম্ভব। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের ঘাটতিগবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চশিক্ষা ও বেশি আয়ের পুলিশ সদস্যরা তুলনামূলকভাবে সচেতন। কিন্তু তুলনামূলক কম শিক্ষিতদের মধ্যে জ্ঞান ও আচরণ আরও দুর্বল। গবেষণার ফলাফল অনুসারে, ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বায়ুদূষণ প্রতিরোধে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করলেও মাত্র ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করেন।

অন্যদিকে, ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে ধূমপানের হার ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ, যা তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব রোটেশনের ব্যবস্থা নেই, নেই মাস্ক সরবরাহ, নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা বা ঝুঁকিভাতাও।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। আমরা ট্রাফিক পুলিশদের মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়ে থাকি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পুলিশ হাসপাতালে যে কোনো সময় চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আমাদের তো রাস্তায় থাকতে হবে। তবুও চেষ্টা করছি সুবিধা বাড়ানোর। এরই মধ্যে কিছু ফ্যান দিয়েছি। গরম থেকে খানিক স্বস্তি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পুলিশ বক্সে এসির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ট্রাফিক জ্যাম যত বেশি হচ্ছে, দূষণ তত বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করছি জ্যাম কমানোর। বিআরটিএ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে। আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

আরও পড়ুন

ঢাকায় যানজটে রাজনৈতিক সমাবেশের দায় দেখছে ট্রাফিক পুলিশসড়কে নিয়ম ভাঙার মহোৎসব, ট্রাফিক পুলিশকে ‘থোড়াই কেয়ার’

‘মূল সমস্যা হলো, ঢাকা শহরের সক্ষমতা ২৫ লাখ মানুষের। কিন্তু এখানে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের বসবাস। নগরীর সক্ষমতা অনুযায়ী গাড়ি থাকা উচিত ৩ লাখ। অথচ ঢাকা শহরে প্রায় ২২ লাখ যানবাহন রয়েছে। গাড়ির ধোঁয়ার পাশাপাশি বছরজুড়ে বিভিন্ন রাস্তা কাটাকাটি ও যত্রতত্র নির্মাণসামগ্রীর কারণে দূষণ বেশি হচ্ছে। এতে আমরা সবচেয়ে বেশি ভুগছি’- যোগ করেন সরওয়ার আলম।

ট্রাফিক পুলিশদের জন্য পরামর্শ গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত স্তরে মাস্ক বা এয়ার ফিল্টারিং ডিভাইস ব্যবহার, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া জরুরি। প্রাতিষ্ঠানিক স্তরে সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সরবরাহ, প্রশিক্ষণ এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে রোটেশনাল ডিউটি চালুর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নীতিগত স্তরে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং টেকসই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শহরের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

গবেষণাটির পরিচালক অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকার ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা পেশাগত কারণেই বায়ুদূষণে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। যানবাহনের ধোঁয়া এবং অন্যান্য বায়ুদূষণের উৎসের সরাসরি সংস্পর্শে থাকার ফলে তারা মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।’

                                                    অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন

‘আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রতিদিনের বায়ুদূষণ কীভাবে ট্রাফিক পুলিশদের শারীরিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে। যদিও তাদের বায়ুদূষণ সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞান সন্তোষজনক, তবে তাদের সুরক্ষামূলক অভ্যাস ও দৃষ্টিভঙ্গির ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এজন্য ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সঠিক প্রশিক্ষণ, সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আমাদের এ গবেষণার ফলাফল নীতি নির্ধারকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হতে পারে, যা ট্রাফিক পুলিশদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও সহায়ক হবে।’

আরএএস/এমকেআর/এমএফএ/জেআইএম