সন্নিকটে ঈদ। চলছে ৬টি সিনেমা মুক্তির প্রস্তুতি। এরমধ্যে রয়েছে ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় তারকা শাকিব খানের সিনেমা ‘তাণ্ডব’। আরও আছে শরীফুল রাজের ‘ইনসাফ’, বাঁঁধন অভিনীত ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’, জাহিদ হাসান, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, অপি করিমসহ একঝাঁক তারকার ‘উৎসব’, আদর-পূজা জুটির ‘টগর’, আরিফিন শুভ, মন্দিরা চক্রবর্তী, ফজলুর রহমান বাবুদের ‘নীলচক্র’ ছবিগুলো।
Advertisement
চারদিক যখন সিনেমাগুলোর প্রচারণায় মুখরিত তখনই এলো হল বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি। মূলত টিকিট বিক্রির অর্থ বণ্টন নিয়ে প্রযোজকদের প্রস্তাব নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন খাত। প্রযোজকদের পক্ষ থেকে স্টার সিনেপ্লেক্সকে তিন দফা প্রস্তাব দেওয়ার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।
রাজধানীর পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা বলেন, কোনো সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগতভাবে চাপিয়ে দেওয়া হলে তারা তা মানবেন না। প্রয়োজনে ঈদের আগে দেশের সব সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘ঈদের সময় প্রচুর দর্শক হলে আসেন। এটাকে অতিরিক্ত মুনাফার সুযোগ হিসেবে নিচ্ছেন কিছু প্রযোজক। তারা নিজেদের স্বার্থে শেয়ার মানি বাড়াতে সিনেপ্লেক্সসহ কিছু হলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। এটা অন্যায্য এবং একতরফা। এভাবে সিনেপ্লেক্সকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘প্রযোজকদের যৌক্তিক দাবি থাকলে তা প্রযোজক সমিতির মাধ্যমে জানানো যেত। কিন্তু তারা রাতের আঁধারে চিঠি পাঠিয়ে বা গোপন বৈঠক করে সিনেপ্লেক্সকে নিজেদের নিয়মে চলতে বাধ্য করছেন। আমরা এটা মানি না। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। এর মধ্যে সমাধান না এলে সব হল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেও আমরা বাধ্য হব।’
প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস প্রযোজকদের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘নতুন কিছু প্রযোজক, যাদের এক-দু’টি সিনেমা ব্যবসাসফল হয়েছে তারা এখন নিয়ম ভাঙার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমাদের ৫০ বছরের ইতিহাসে কখনো এমন হয়নি যে কোনো প্রযোজক ব্যক্তিগতভাবে হলের মালিকদের সঙ্গে বসে নিয়ম পাল্টেছেন। সবসময় সিদ্ধান্ত এসেছে সংগঠনের মধ্য দিয়ে।’
সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা সবসময় চেয়েছি সবাই টিকে থাকুক। সেই কারণেই চলচ্চিত্রের মন্দার সময়েও গত ঈদে ভালো ব্যবসা হয়েছে। এবারও ঈদে আগের নিয়মেই সিনেমা প্রদর্শনের দাবি জানাচ্ছি। ঈদের পরে প্রয়োজনে সবাই মিলে নতুন নিয়ম তৈরি করা যেতে পারে। কিন্তু এখনই একতরফা সিদ্ধান্ত মানা সম্ভব নয়।’
প্রদর্শক সমিতির নেতারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, প্রযোজকদের চাপিয়ে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত হলে মালিকেরা তা মানবেন না। বরং তাতে সিনেমা প্রদর্শন ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এর দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রযোজকদেরই।
Advertisement
দেখা যাক, ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে এই সংকট কোন দিকে মোড় নেয়।
এলআইএ/এএসএম