দেশের নারীরা ‘হোমমেকার’ বা গৃহস্থালি কাজে শ্রম ও সময় দেন। অবৈতনিক তো বটেই, তাদের এ কাজের কোনো স্বীকৃতিও নেই। তাদের এ কাজকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
Advertisement
একই সঙ্গে নারীদের এ অবদান আর্থিক মানদণ্ডে হিসাব কষে জিডিপিতে যোগ করার পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, কর্মজীবী নারীর পাশাপাশি অনেক নারী ‘হোমমেকার’ হিসেবে তাদের শ্রম এবং সময় উৎসর্গ করছেন। কিন্তু তাদের এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রায়শই যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। আমি সরকার ও আপামর জনসাধারণের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তাদের (নারী) অবদান আর্থিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে জিডিপিতে যোগ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদ্ধতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Advertisement
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জরিপ অনুযায়ী, নারীর অবৈতনিক সেবামূলক কাজের আর্থিক মূল্য তাদের বেতনভুক্ত শ্রম থেকে প্রাপ্ত আয়ের চেয়ে ২ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৯ গুণ বেশি।
বাজেট বক্তৃতায় নারীর অস্বীকৃত বা অবৈতনিক সেবামূলক কাজকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার করায় অর্থ উপদেষ্টা তথা অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জেন্ডার সমতা অর্জনের জন্য জাতীয় বাজেটে নারীর গৃহস্থালি ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিরাচরিত অর্থনৈতিক সূচকগুলোর কারণে নারীর অবৈতনিক গৃহস্থালি শ্রমের গুরুত্বপূর্ণ অবদান প্রায়শই অদৃশ্য থেকে যায়।
তিনি আরও বলেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ১৫ বছর ধরে নারীর অস্বীকৃত কাজের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছে। স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এ কাজের মূল্য নির্ধারণ করে জাতীয় আয় বা জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা গেলে এটি এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হবে। এ স্বীকৃতি নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি করবে এবং বিদ্যমান নেতিবাচক মনোভাব পরিবর্তনে সহায়তা করবে।
Advertisement
এএএইচ/কেএসআর/এমএস