সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়ন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি সুবোধ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সরকারি জেলে কার্ডের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সরকারি চাল ইউনিয়ন পরিষদ বা নির্ধারিত গোডাউনে না রেখে নিজ বাড়িতে মজুত করেছেন এবং প্রত্যেক জেলে কার্ডধারীকে কম পরিমাণ চাল দিয়ে নগদ অর্থ আদায় করছেন।
Advertisement
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কার্ডধারী জেলে পরিবারকে প্রতি মাসে ৫৬ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা। তবে খাজরা ইউনিয়নের জেলেরা অভিযোগ করেছেন, সভাপতি সুবোধ মণ্ডল তাদের জোরপূর্বক ৩১ থেকে ৩৪ কেজি চাল দিচ্ছেন ও বাকি অংশ নিজে রেখে দিচ্ছেন। এর বাইরে চাল পরিবহনের খরচ দেখিয়ে মাথাপিছু কিছু টাকাও আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সুবোধ মণ্ডল বলেন, আমার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ২৪০ জন জেলের চাল আমার বাড়িতে রাখা আছে। কারণ ইউনিয়নে রাখার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে চাল বাড়িতে রেখেছি। বাজেট কম আসায় ইউনিয়নের ৬৫১ জন কার্ডধারীকে ৩১ কেজি ৪০০ গ্রাম করে চাল দেওয়া হচ্ছে, বিষয়টি সবার জানা।
অর্থ আদায়ের অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, চাল পরিবহনে কিছু খরচ হয়, সেটুকু সমন্বয়ের জন্য সামান্য টাকা নিয়েছি। এর বাইরে কোনো অনিয়ম হয়নি।
Advertisement
তবে এ বিষয়ে ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, সরকার আমাদের প্রতি মাসে ৫৬ কেজি করে চাল দেওয়ার নিয়ম করেছে। কিন্তু সভাপতি কম চাল দিচ্ছেন ও টাকাও নিচ্ছেন। আমরা এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সত্যজিৎ মজুমদার বলেন, আমরা স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে কিছু অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
বরাদ্দকৃত চালের পরিমাণের বিষয়ে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ৫৬ কেজি করেই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কম বিতরণের কোনো সুযোগ নেই।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সরকার প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলে পরিবারকে প্রতি মাসে চাল বরাদ্দ দিয়ে থাকে। এটি কোনোভাবেই কোনো ব্যক্তির বাড়িতে রাখা বা ইচ্ছেমতো বিতরণের সুযোগ নেই। সরকারি নীতিমালার বাইরে গিয়ে চাল বিতরণ করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
Advertisement
এদিকে ইউনিয়নের সচেতন মহল ও ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক হিসাব অনুযায়ী চাল বিতরণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তারা বলেন, এভাবে যদি চাল কেটে দেওয়া হয় ও কেউ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়, তাহলে প্রকৃত জেলে পরিবার তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
আহসানুর রহমান রাজীব/এমএন/জেআইএম