সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে লাগাতার বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রাঙ্গামাটির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, লংগদু ও সদর উপজেলার বেশকিছু এলাকায় পানি উঠেছে। এসব এলাকায় গত পাঁচদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।
Advertisement
প্রশাসনের পক্ষ হতে মাইকিং করে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসার আহ্বান করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার লাইল্যাঘোনা নামক একটি ওয়ার্ডের তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার মাস্টারপাড়া, মধ্যমপাড়া, বটতলী, বাবুপাড়া, রূপকারী ও পশ্চিম লাইল্যাঘোনা। প্লাবিত এলাকার মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
শংকর বড়ুয়া নামের স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ‘কয়েকদিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ির কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বাঘাইছড়িতে প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
Advertisement
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘পৌর এলাকার আশপাশের কয়েকটি গ্রামে পানি উঠেছে। আমার ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রেখেছি। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্গতদের উপস্থিতি কম।’
এদিকে জেলার লংগদু ও জুরাছড়ি উপজেলার বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। লংগদু সদর ইউনিয়নের দজরপাড়া এলাকার সড়ক, সেতু ও মানুষের বসতঘরে পানি উঠেছে। জুরাছড়ির উপজেলার জুরাছড়ি, বনযোগীছড়া, মৈদং ও দুমদুম্যা ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকায় বসতঘর, কৃষিজমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। স্রোতে ভেসে গেছে সড়ক।
লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) বিনয় চাকমা বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলে আমাদের দজরপাড়া এলাকার রাস্তা, সেতু ও বসতঘরে পানি উঠেছে। কৃষি জমির ফসল ও সবজিক্ষেত নষ্ট হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের জামুরাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা সদরের ধামাইপাড়া হতে বরইতলী সড়কের একাংশ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
Advertisement
জুরাছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ‘আমরা দুর্গত মানুষের জন্য ১১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছি তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো কেউ আশ্রয় নেয়নি।’
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ জাগো নিউজকে জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ হতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলা মিলিয়ে ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। এছাড়াও রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরমান খান/আরএইচ/জেআইএম