ধর্ম

শিংবিহীন গরু কোরবানি করা যাবে কি?

শিংবিহীন গরু কোরবানি করা যাবে কি?

ছয় ধরনের গবাদিপশু কোরবানি করা যায়: উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। খাওয়া হালাল এমন যে কোনো পশু কোরবানি করা যায় না। যেমন হরিণ খাওয়া হালাল হলেও হরিণ কোরবানি করা যায় না।

Advertisement

ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এ তিন পশু একজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যায়। উট, গরু ও মহিষ এ তিন পশু কোরবানিতে সর্বোচ্চ সাতজন শরিক হতে পারে। অর্থাৎ একজন, দুজন, তিনজন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাতজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে একটি পশু কোরবানি যথেষ্ট হতে পারে।

কোরবানির পশুগুলোর মধ্যে আমাদের দেশে গরু সবচেয়ে সহজলভ্য ও জনপ্রিয়। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই গরু কোরবানি করে থাকেন।

কোরবানির জন্য গরু কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে, গরুটি যেন সুস্থ, সবল ও ত্রুটিমুক্ত হয়। বড় ধরনের ত্রুটি আছে এমন গরু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না। নিজে হেঁটে জবাইয়ের জায়গায় যেতে পারে না এমন অসুস্থ, শুকনো বা দুর্বল গরু দিয়েও কোরবানি শুদ্ধ হয় না।

Advertisement

কোরবানির উপযুক্ত হওয়ার জন্য গরুর বয়স কমপক্ষে দুই বছর বয়স হতে পারে। এর চেয়ে কম বয়সী গরু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না।

কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য গরুর শিং ওঠা বা শিং থাকা জরুরি নয়। দুই বছর বয়স হওয়ার পরও শিং ওঠেনি এমন গরু কোরবানি করা যায়। অর্থাৎ শিংবিহীন গরুর বয়স দুই বছরের বেশি হলে তা কোরবানি করা যায়। আর যে গরুর বয়স কম, ওই গরুর শিং উঠলেও কোরবানি করা যায় না।

তবে কোনো গরুর শিং গোড়া থেকে উঠে গেলে বা ভেঙে গেলে, সে কারণে মস্তিস্কও ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা ওই গরুর গুরুতর ত্রুটি হিসেবে গণ্য হয় এবং ওই গরু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না।

শিং ভাঙ্গার কারণে মস্তিষ্কে যদি আঘাত না পৌঁছে, তাহলে ওই গরু কোরবানি করা জায়েজ। অর্ধেক শিং বা শিঙের কিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে এমন গরুও কোরবানি করা জায়েজ।

Advertisement

কোরবানি ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কোরআনে আল্লাহ তাআলা নামাজের সাথে যুক্ত করে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, আর কোরবানির উটকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন বানিয়েছি; তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে কল্যাণ। সুতরাং সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান অবস্থায় সেগুলির উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ কর যখন সেগুলি কাত হয়ে পড়ে যায় তখন তা থেকে খাও। যে অভাবী, মানুষের কাছে হাত পাতে না এবং যে অভাবী চেয়ে বেড়ায়-তাদেরকে খেতে দাও। এভাবেই আমি ওগুলিকে তোমাদের অনুগত করে দিয়েছি; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আল্লাহর কাছে পৌঁছে না এগুলোর গোশত ও রক্ত; বরং তার কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবেই তিনি সে সবকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর তাকবির পাঠ করতে পার, এজন্য যে, তিনি তোমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন; সুতরাং তুমি সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দাও। (সুরা হজ: ৩৬, ৩৭)

ওএফএফ/এমএস