ধর্ম

শিশু ধনী হলে তার পক্ষ থেকে কোরবানি করতে হবে?

শিশু ধনী হলে তার পক্ষ থেকে কোরবানি করতে হবে?

কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কোরআনে আল্লাহ তাআলা নামাজের সাথে যুক্ত করে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,

Advertisement

اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ اِنَّ شَانِئَکَ هُوَ الۡاَبۡتَرُনিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

مَن كان له سَعَة ولمْ يُضَحِّ فلا يَقْرَبَنّ مُصَلّاناযার কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ইদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)

Advertisement

কোরবানি ওয়াজিব এমন প্রত্যেক মুসলমান, প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) পুরুষ ও নারীর ওপর যারা ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ অর্থাৎ সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা তার সমমূল্যের অতিরিক্ত সম্পদের মালিক থাকে।

অর্থাৎ শুধু নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেই কোরবানি করা ওয়াজিব হয় না। ঈদুল আজহার তিন দিন কেউ সফরে থাকলে তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয় তিনি ধনী বা নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও। মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ব্যক্তি ধনী হলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। একইভাবে শিশু ধনী হলেও তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়।

শিশুর বাবা-মা বা অভিভাবক চাইলে নিজের সম্পদ দিয়ে শিশুর পক্ষ থেকে কোরবানি করতে পারেন। শিশুর পক্ষ থেকে কোরবানি করা হলে তা নফল কোরবানি হিসেবে শুদ্ধ হবে।

প্রসঙ্গত, জাকাতের নেসাব ও কোরবানির নেসাবের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে নগদ অর্থ, সোনা-রুপা, অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে লাগে না এমন জমি, প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাব হিসাবযোগ্য। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিন্ন ভিন্ন সম্পদের একত্র মূল্যের পরিমাণ যদি সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমান হয়, তাহলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।

Advertisement

কোরবানির ক্ষেত্রে নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়; বরং জিলহজের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে যে কোনো সময় নেসাবের মালিক হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।

এক পরিবারে একাধিক ব্যক্তি সামর্থ্যবান হলে প্রত্যেকের পক্ষ থেকে পৃথক কোরবানি করা ওয়াজিব। স্বামী ও স্ত্রী দুজনই সম্পদশালী ও সামর্থ্যবান হলে স্বামী ও স্ত্রীর পক্ষ থেকে পৃথক কোরবানি করতে হবে। স্বামীর কোরবানি স্ত্রীর জন্য যথেষ্ট হবে না। একইভাবে বাবার কোরবানি প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে বা মেয়ের জন্য যথেষ্ট হবে না যদি তারা সামর্থ্যবান হয় অর্থাৎ উল্লিখিত পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়।

ওএফএফ/এএসএম