রাজধানীর দুটি ওয়ার্ডের আড়াইশো জন প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিচর্যাকারীদের স্বনির্ভর করতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা (জিবিএসএস)। তাদের মধ্যে ৫০ জন সরাসরি ও ২০০ জন পরোক্ষভাবে উপকারভোগী হবেন। উপকারভোগীদের মধ্যে থাকবেন প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধীদের পরিচর্যাকারী এবং প্রান্তিক নারী।
Advertisement
চলতি মে মাস থেকে এ প্রকল্প শুরু হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। প্রকল্পের কর্মএলাকা হবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৩নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৭নং ওয়ার্ডের মানিকনগর এলাকা।
শনিবার (৩১ মে) সকাল ১০টায় রাজধানীর ধানমন্ডির বিলিয়া অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘প্রকল্প পরিচিতি’ সভায় এ তথ্য জানানো হয়। ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দরিদ্রতা হ্রাস’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা (জিবিএসএস)’। এতে সহায়তা দিচ্ছে কোরিয়ান ডিজঅ্যাবল পিপল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (কোডি)।
প্রকল্প পরিচিতি সভায় সভাপতিত্ব করেন জিবিএসএস’র সভাপতি মাসুদা ফারুক রত্না। প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের যুগ্ম-পরিচালক এস এম রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সুইড বাংলাদেশের মহাসচিব মো. মাহাবুবুল মুনির, এডাব’র পরিচালক এ কে এম জসীম উদ্দীন, দিনাজপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট জান্নাতুস সাফা শাহিনুর। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জিবিএসএস’র প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইজর মেহেদী হাসান কিংশুক এবং কোষাধ্যক্ষ এজাবত উল্লাহ।
Advertisement
মেহেদী হাসান কিংশুক বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য সরকারি যে বরাদ্দ, তা খুবই কম। জাতীয় বাজেটে প্রতিবন্ধী উন্নয়নে আরও বরাদ্দ রাখতে হবে। সেইসঙ্গে প্রাইভেট কোম্পানিগুলোরও সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসেবে প্রতিবন্ধী উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জান্নাতুস সাফা শাহিনুর বলেন, আমি প্রত্যন্ত এলাকার নারী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করি। আমি সিপিডিআরআই প্রকল্পের যেকোনো সহযোগিতায় প্রস্তুত।
এডাব পরিচালক জসীম উদ্দীন বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রম প্রকল্প, যা প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে অবদান রাখবে। তবে সরকারের এ বিষয়ে আরও দৃষ্টি দিতে হবে। জিবিএসএস প্রতিবন্ধী উন্নয়ন প্রকল্পে এডাবের সহযোগি সংস্থার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
সুইড বাংলাদেশের সহাসচিব মাহাবুবুল মুনির বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন শুধু একটি প্রকল্প নয়, এটি একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা। সমাজের প্রতিটি মানুষকে সমান অধিকার এবং সুযোগ দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। জিবিএসএস ও কোডি যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা বাস্তবায়নে সুইড বাংলাদেশ সবসময় সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করে যাবে।
Advertisement
প্রধান অতিথি সমাজসেবা অধিদপ্তরের যুগ্ম-পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে সরকার নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তবে এনজিও ও উন্নয়ন সহযোগীদের এ ধরনের কার্যক্রম সরকারি উদ্যোগকে সম্পূরক করে তোলে। জিবিএসএস ও কোডি যৌথভাবে যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে, তা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
সভাপতির বক্তব্যে জিবিএসএসের সভাপতি মাসুদা ফারুক রত্না বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন ও জীবনমান পরিবর্তনের একটি টেকসই ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই। তাদের অন্তর্ভুক্তি ছাড়া কোনো টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। জিবিএসএস সবসময় সমাজের প্রান্তিক মানুষের পাশে থেকেছে; থাকবে। এ প্রকল্প আমাদের সেই প্রতিশ্রুতিরই বাস্তব উদাহরণ।
এএএইচ/এমকেআর