জাতীয় ফুটবল দলের অনুশীলন দিয়ে দীর্ঘ ৫৫ মাস পর শনিবার ফুটবলারদের পা পড়ার কথা ছিল ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে। সবাই সেই প্রতিক্ষায়ই ছিলেন। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে শেষ মুহূর্তে অনুশীলন মাঠ পরিবর্তন করা হয়। আসন্ন ভুটান ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা শিষ্যদের প্রথম দিনের অনুশীলন হয় কিংস অ্যারেনায়।
Advertisement
জাতীয় দলের প্রথম দিনের অনুশীলনে সবার আগ্রহ ছিল ইতালি প্রবাসী ফুটবলার ফাহামিদুল ইসলামকে নিয়ে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে প্রাথমিক দলে ডাক পেয়ে সৌদিতে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে যোগ দিয়েও সেখান থেকেই ইতালি ফিরতে হয়েছিল ফাহামিদুলকে। তানিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল ফুটবল অঙ্গনে।
ফাহামিদুলকে অন্যায়ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল এমন অভিযোগে সরগরম ছিল ফুটবলাঙ্গন। মিছিল, অনশন অনেক কিছুই হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে বাফুফে সভাপতিকে তলবও করেছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। সেই ফাহামিদুলকে আবার ডাকা হয়েছে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের প্রাথমিক একাদশে। ২৮মে ঢাকায় আসা এই ইতালি প্রবাসী প্রথমদিন থেকেই ছিলেন অনুশীলনে।
প্রথম সেশন অনুশীলনের পর সহকারী কোচ হাসান-আল-মামুন বলেন, 'অনুশীলনের জন্য অবশ্যই ছেলেরা রোমাঞ্চিত ছিলেন। জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন হবে, ছেলেরা সেভাবেই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু আবহাওয়ার কারণ হুট করে বলা হলো, আমাদের কিংস অ্যারেনায় যেতে হবে। প্রথম দিনেই অনুশীলনে আবহাওয়া বাগঢ়া বাধালো। তারপরও আমরা প্রথম দিনের অনুশীলন শেষ করলাম। টিম মিটিংয়ে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা কার কি দায়িত্ব তা বলে দিয়েছেন। সবাইকে উজ্জীবিত করার জন্য যেভাবে বার্তা দেওয়ার সেটাই দিয়েছেন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ভালো করার জন্য। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জিততে চাই। সব মিলিয়ে ফুটবল নিয়ে যে আবহ চারদিকে তৈরি হয়েছে, সেটা সবাইকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।'
Advertisement
ঘরের মাঠে প্রথম অনুশীলন করলেন ফাহামিদুল। এই ইতালি প্রবাসী ফুটবলার সম্পর্কে সহকারী কোচ বলেন,'ফাহামিদুল অবশ্যই মেধাবী খেলোয়াড়। সে সৌদি আরবে খুব কম সময় পেয়েছিল। এখনকার ফাহামিদুলকে আমার এবং কাবরেরার কাছে মনে হচ্ছে, সে অনেকটা প্রস্তুত হয়ে এসেছে। বোঝাই যায সে ভালো কিছু করার জন্য মুখিয়ে আছে। দেখা যাক, সে কিভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারে।'
ডিফেন্ডার ইসা ফয়সাল বলেছেন, 'চারটা সেশন হবে। আমরা সবাই যেহেতু খেলার মধ্যে আছি, তাই সবার ফিটনেস ভালো অবস্থায় আছে। ফিটনেসের জন্য আমরা জিপিএস ব্যবহার করছি, যা ইতিবাচক দিক। ভুটান ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আমাদের ফিটনেস সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হবে না। অবশ্যই সিঙ্গাপুর দলকে আমরা সম্মান করি। ওরা ভালো দল। আমাদের ডিফেন্ডারদের মধ্যেও কৌতুহল আছে, প্রতিপক্ষ যত ভালোই হোক না কেন, আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব দলকে ভালো কিছু দেওয়ার। হামজা ভাই আছেন, সামিত সোম আসবেন, ফাহামিদুল আছেন। যারা আগে ছিলেন তারাও আছেন। ইনশাল্লাহ আমাদের মিডফিল্ড শক্তিশালী হবেই। সব মিলিয়ে আমরা সিঙ্গাপুরের সাথে ভালো কিছু করব। ফাহামিদুলের সাথে ভালো সময় কাটছে। সে আমাদের মতোই মিশুক। সে যে প্রবাসী সেটা আমি বলব না, সে বাংলাদেশী খেলোয়াড় সেটাই বড় কথা। এমন কমপ্যাক্ট মিডফিল্ড থাকলে অবশ্যই ভালো। তারা তাদের কাজটা করতে পারলে আমাদের রক্ষণের কাজটা সহজ হয়ে যাবে।'
আরেক ডিফেন্ডার রহমত মিয়া বলেছেন, 'এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ড শুরু হয়ে গেছে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। যেহেতু একটা ম্যাচ চলে গেছে, আমাদের হাতে আর পাঁচটা ম্যাচ আছে। আমাদের যে সমর্থকরা আছেন, দর্শকরা আছেন। তারা আমাদের সমর্থন তারা দিচ্ছেন। তাদের প্রত্যাশাও অনেক উঁচুতে। আমাদের একটা মিটিং হয়েছে। সেখানে এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা সবাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আরও ভালো কিছু করার জন্য।'
আরআই/আইএইচএস/
Advertisement