সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন তিনি। তার মৃত্যু শুধু একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়- বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
Advertisement
‘মেজর জিয়া বলছি’- বেতার তরঙ্গে ভর করে ইতিহাসের পাতায়১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে উচ্চারিত হয়, ‘আমি মেজর জিয়া বলছি...।’ এ ঘোষণায় দিকভ্রান্ত জাতিকে সাহস ও দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি ছিলেন ৪ বছর, প্রভাব রয়ে গেছে এখনোজিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন। তার ‘১৯ দফা কর্মসূচি’ ছিল আত্মনির্ভর বাংলাদেশের নীলনকশা। খাদ্য ঘাটতির নতুন এক দেশকে রপ্তানিমুখী কৃষিতে ধাবিত করেন তিনি।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, এই দিনে আমরা একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, সাহসী রাষ্ট্রনায়ককে হারিয়েছি। তার বহুদলীয় গণতন্ত্র ও ১৯ দফা কর্মসূচি আজও প্রাসঙ্গিক। তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করতে শহীদ জিয়ার আদর্শই পথ দেখায়।
Advertisement
শ্রদ্ধা ও কর্মসূচিজিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত নানান কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে তার সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সারাদেশে আলোচনা সভা, দোয়া এবং অসহায়দের মধ্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি চলছে।
আরও পড়ুন শিগগির গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা দেখতে পাবো: খালেদা জিয়া ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা থাকবে নাএ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার দলের আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই দিন আমাদের পরিবার নয়, গোটা জাতির জন্যই বেদনার।’
তিনি বলেন, ‘এই দিনে শুধু আমাদের পরিবার নয়, গোটা জাতিই হয়ে উঠেছিল অভিভাবকহীন। যিনি চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে পথ দেখিয়েছিলেন, সেই স্থানেই তিনি শহীদ হলেন। গণতন্ত্র, বিচার বিভাগ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরতা- এই সবকিছুর ভিত্তি গড়েছিলেন শহীদ জিয়া। তার রেখে যাওয়া আদর্শই আজ আমাদের গণতন্ত্র রক্ষার অনুপ্রেরণা।’
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘আজকের দিনে আধুনিক বিশ্বে এমন একজন সৎ ও নীতিবান নেতা বিরল। সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট থেকে রাষ্ট্রপতি হলেন, কিন্তু নিজের নামে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বাড়ি বা গাড়ি রাখেননি। তার মতো সততার উদাহরণ রাষ্ট্রনায়কদের জন্য এক মাইলফলক।
Advertisement
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শহীদ জিয়ার জীবন, দর্শন ও কর্মসূচি আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ। তার স্বাধীনতার ঘোষণা জাতিকে এক মোহভঙ্গের মুহূর্তে অভয় দিয়েছিল। সিপাহী-জনতার মিলিত শক্তির প্রতিনিধি হয়ে তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্র। তার জনপ্রিয়তাই ছিল মৃত্যুর প্রধান কারণ। আশা করি, শহীদ জিয়ার দেখানো পথ ধরেই বাংলাদেশ আবার গণতন্ত্রের পথে ফিরবে।’
কেএইচ/কেএসআর/এএসএম