হিজরি ক্যালেন্ডারের শেষ মাস জিলহজের প্রথম দশক ইসলামে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। কোরআনে আল্লাহ জিলহজের দশ রাতের শপথ করেছেন। আল্লাহ বলেন,
Advertisement
وَ الۡفَجۡرِوَ لَیَالٍ عَشۡرٍ وَّ الشَّفۡعِ وَ الۡوَتۡرِশপথ ভোরবেলার, শপথ দশ রাতের, শপথ জোড় ও বেজোড়ের। (সুরা ফাজর: ১-৩)
জাবের (রা.) আনহু বৰ্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এ আয়াতে দশ হচ্ছে জিলহজ মাসের দশ দিন, বেজোড় হচ্ছে আরাফার দিন আর জোড় হচ্ছে কোরবানির দিন। (মুসনাদে আহমদ: ৩/৩২৭)
কোরআনের আরেক জায়গায় আল্লাহ তাআলা বলেছেন,وَاَذِّنۡ فِی النَّاسِ بِالۡحَجِّ یَاۡتُوۡكَ رِجَالًا وَّ عَلٰی كُلِّ ضَامِرٍ یَّاۡتِیۡنَ مِنۡ كُلِّ فَجٍّ عَمِیۡقٍ لِّیَشۡهَدُوۡا مَنَافِعَ لَهُمۡ وَ یَذۡكُرُوا اسۡمَ اللّٰهِ فِیۡۤ اَیَّامٍ مَّعۡلُوۡمٰتٍ عَلٰی مَا رَزَقَهُمۡ مِّنۡۢ بَهِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ
Advertisement
মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা দাও; তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং কৃশকায় উটে চড়ে দূর পথ পাড়ি দিয়ে। যেন তারা নিজেদের কল্যাণের স্থানসমূহে হাজির হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু থেকে যে রিজিক দিয়েছেন তার ওপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে। (সুরা হজ: ২৮)
কোরআনের অধিকাংশ ব্যাখ্যাকারের মতে এ আয়াতে ‘নির্দিষ্ট দিনসমূহ’ বলে জিলহজের প্রথম দশ দিনকে বোঝানো হয়েছে। জিলহজের প্রথম দশকেই হজের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। আল্লাহর বান্দারা বেশি বেশি করে আল্লাহর প্রশংসা করে, তার পবিত্রতা বর্ণনা করে, আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে কোরবানি করে, তার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে।
এ দশ দিন যে কোনো নফল আমলেরই সওয়াব বেড়ে যায়। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, অন্যান্য যে কোনো সময়ের তুলনায় জিলহজের প্রথম দশ দিনের নেক কাজ আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। (সহিহ বুখারি)
এ দিনগুলোর অন্যতম বিশেষ আমল আল্লাহর জিকির। এ দশ দিন বেশি বেশি তাকবির, তাহমিদ অর্থাৎ আল্লাহর বড়ত্ব পবিত্রতা বর্ণনার নির্দেশ এসেছে হাদিসে। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, নেক আমলের জন্য এ দশ দিন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ। তোমরা এ সময়ে বেশি বেশি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আলহামদুলিল্লাহর জিকির করো। (মুসনাদে আহমদ)
Advertisement
বর্ণিত রয়েছে, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) ও আবু হোরায়রা (রা.) এ দশদিন বাজারে যাওয়ার সময়ও উচ্চৈস্বরে তাকবির বলতে বলতে যেতেন, অন্যরাও তাদের দেখাদেখি তাকবির বলতো। এভাবে তারা সবাইকে মনে করিয়ে দিতেন আল্লাহর বড়ত্ব ও পবিত্রতা বর্ণনার বিশেষ ফজিলতপূর্ণ সময় অতিবাহিত হচ্ছে।
জিলহজের চার দিন ৯ জিলহজ ফজরের নামাজ থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্তের ফরজ নামাজের পর একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। তাকবিরে তাশরিক হলো,
الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله والله أكبر، الله أكبر ولله الحمد
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহর জন্যই সব প্রশংসা।
ওএফএফ/জিকেএস