দেশজুড়ে

যশোরে ‘ভুয়া রিয়াল’ প্রতারণা চক্রের চার সদস্য গ্রেফতার

যশোরে ‘ভুয়া রিয়াল’ প্রতারণা চক্রের চার সদস্য গ্রেফতার

‘ভুয়া রিয়াল’ দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতকারী চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে যশোর গোয়োন্দা (ডিবি) পুলিশ। খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের এসআই নূর ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার দিনভর অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, প্রতরণার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন, খুলনা ফুলতলা থানার বরণপাড়া দামোদর গ্রামের মৃত ওমর আলী সরদার ছেলে আব্দুল হামিদ, আব্দুল কাশেম শেখের ছেলে রাজু শেখ, আব্দুল আলীম শেখের ছেলে সাইফুল্লাহ সামাদ ও খানজাহান আলী থানার পাড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল জলিল শেখের ছেলে ইমদাদুল শেখ।

যশোর পুলিশের মিডিয়া সেল জানিয়েছে, ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম ঝিনাইদহ জেলার কোর্টচাঁদপুর থানাধীন সলেমানপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী। প্রায় একমাস আগে ভুক্তভোগীর সঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয় চারজন ব্যক্তির কোটচাঁদপুর এলাকায় পরিচয় হয়। তারা একপর্যায়ে ভুক্তভোগীকে বলে তাদের নিকট বেশ কিছু সৌদি রিয়াল আছে। কিন্তু এ মুহুর্তে তারা এগুলো ভাঙাতে পারছে না। এসময় তারা ভুক্তভোগীকে একশ রিয়াল দেখায় ও তাকে প্রলোভন দেখিয়ে বলে সে যদি এগুলো নিতে চায় তবে প্রতি রিয়াল ১৫ টাকা দরে বিক্রি করবে। ভুক্তভোগী দেখেন বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী এটা অনেক অল্প মূল্য, তখন তিনি তাদের নিকট থেকে সবগুলো রিয়াল ক্রয় করতে রাজি হন।

Advertisement

এরপর গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে তারা ভুক্তভোগীকে ফোন করে ও তাকে টাকা নিয়ে যশোর অভয়নগর থানাধীন নওয়াপাড়া বুইকারা পশু-হাসপাতালের পাশে সকালে আসতে বলে। তিনি তাদের কথা মতো যথা সময়ে ওই স্থানে হাজির হলে প্রথমে দুজন তার সঙ্গে কথা বলতে থাকেন এবং একপর্যায়ে সেখানে আরও একজন আসেন। একটু দূরে অন্য একজন দাঁড়িয়ে থাকে। এসময় তারা ভুক্তভোগীর সঙ্গে চূড়ান্ত কথা বলে পাশের গলির ভেতরে নিয়ে তার নিকট থেকে নগদ চার লাখ টাকা নেয় ও তাকে রিয়ালের কথা বলে কাপড়ে মোড়ানো একটা বান্ডিল দিয়ে বলে এগুলো নিয়ে নিরিবিলি কোনো স্থানে গিয়ে খুলতে। এই বলে তারা একটি মোটরসাইকেলে দ্রুত ঘটনাস্থান ত্যাগ করে।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগী একটা নিরিবিলি স্থানে গিয়ে সেটি খুলে দেখতে পান কিছু কাগজ দিয়ে একটি ভিম সাবান মোড়ানো। তখন ভিকটিম বুঝতে পারেন তিনি কোনো প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছেন এবং তারা পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণা করে তার নিকট হতে নগদ অর্থ নিয়ে গেছে।

পরবর্তীতে তিনি জেলা পুলিশের শরণাপন্ন হলে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন তদন্তে নামে। সাইবার ক্রাইমের এসআই (নি.) দেবব্রত ঘোষের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের শনাক্ত পূর্বক গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করে। মঙ্গলবার খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজন আসামিকে গ্রেফতার করে।

তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ও আসামি আব্দুল হামিদের নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল, চারটি সিম কার্ড, ২ নম্বর আসামি ইমদাদুল শেখের কাছ থেকে প্রতারণার সাড়ে তিন হাজার টাকা, একটি মোবাইল ও একটি সিম কার্ড, আসামি রাজু শেখের নিকট থেকে একটি মোবাইল, একটি সিম কার্ড ও পলাতক আসামি জাহিদ সর্দ্দারের বসত বাড়ি হতে প্রতারণার নগদ ৮০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন, একটি সিম কার্ড ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা আদাালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

Advertisement

মিলন রহমান/এমএন/এএসএম