জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন গ্রহণ করে তাকে দণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
একই সঙ্গে ওই আবেদনে মামলার দুই ধারায় তারেক রহমানকে ছয় এবং তিন বছরের কারাদণ্ড থেকেও খালাস দেওয়া হয়েছে।
ডা. জুবাইদা রহমানের করা আপিল আবেদন মঞ্জুর করে বুধবার (২৮ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে আপিলের ওপর শুনানি শেষ করা হয়েছে। দুদক ও আসামি উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গত সোমবার (২৬ মে) হাইকোর্টের একই বেঞ্চে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ মে দিন ধার্য করেন। এরই ধারাবাহিকতায় এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
Advertisement
আদালতে ওইদিন আপিলের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও জাকির হোসেন ভূইয়া শুনানি করেন। তাদের সাথে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মাকসুদ উল্লাহ, এসএম মাহিদুল ইসলাম সজিব, মিজানুর রহমান ও রুকনুজ্জামান সূজাসহ অন্য আইনজীবীরা। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসিফ হাসান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল করিম,সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আজগারুল ইসলাম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাফুজা আক্তার।
আরও পড়ুন
১৭ বছর পর দেশে জুবাইদা রহমান অরফানেজ মামলায় ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন তারেকরায়ের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জুবায়দা রহমানের সিনিয়র আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান সাংবাদিকদের বলেন, জুবাইদা রহমানের আপিল মঞ্জুর করে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারেক রহমানের ক্ষেত্রেও এই রায় প্রযোজ্য হবে, তিনি এই রায়ের সুবিধা পাবেন। অর্থাৎ এ মামলায় তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান খালাস পেলেন।
এর আগে ২১ মে হাইকোর্ট জুবাইদা রহমানের করা আপিল শুনানির জন্য ২২ মে দিন রাখেন। ওইদিন শুনানি নিয়ে আদালত ২৬ মে শুনানির সময় নির্ধারণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানি হয়।
Advertisement
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এ মামলায় ২০২৩ সালের ২ আগস্ট রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ। রায়ে দুটি ধারায় তারেক রহমানের ৯ বছর কারাদণ্ড (৬ ও ৩ বছর, একসঙ্গে চলবে) এবং জুবাইদা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই মামলায় জুবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত বছরের ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজা স্থগিত চেয়ে জুবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে তার বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলো।
আরও পড়ুন
ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা চলছে: ফখরুলসাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ৬ মে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন।
দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জুবাইদা রহমান, যা ১৩ মে মঞ্জুর করেন উচ্চ আদালত। বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুরের পর তিনি আপিল করেন এবং জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে ১৪ মে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন এবং একই সঙ্গে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ২৮ মে দিন নির্ধারণ করেছিলেন।
এফএইচ/এমকেআর/এমএস