বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক রাজধানীর ধানমন্ডি থানার রিয়াজ হত্যা মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া সোহানুর রহমান আজাদ (৪০) নামে এক জামায়াত নেতাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ।
Advertisement
বুধবার (২৮ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহাবুবের আদালতে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে আদেশ অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এদিন পিবিআই পুলিশের ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের পরিদর্শক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার জামায়াত নেতা সোহানুর রহমান আজাদ, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালামান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক ও আওয়ামী লীগ নেতা নুরু মিয়াকে আদালতে উপস্থিত করে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত সোহানের বিষয়ে আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন এবং অন্য আসামিদের প্রত্যেকের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আজাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, সোহানুর রহমান আজাদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের শাহবাগ পূর্ব সাংগঠনিক থানা শাখার বঙ্গবাজার ওয়ার্ডের এনেক্সকো টাওয়ার ইউনিটের সেক্রেটারি। এ সংক্রান্তে জামায়াতের সাংগঠনিক প্রত্যায়নপত্রও দেখান তিনি।
জানা গেছে, জামায়াত নেতা সোহানুর রহমান আজাদ বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ থানার চর এককরিয়া ইউনিয়নের চর এককরিয়া গ্রামের জালাল আহম্মেদ পালোয়ানের ছেলে। এদিন পুলিশ রিমান্ড আবেদনে আজাদকে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থানার চর এককরিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এদিন আদালতে শুনানিতে তার আইনজীবী জহিরুল ইসলাম বলেন, আসামি জামায়াতের ইউনিট সেক্রেটারি। তিনি এ মামলার সঙ্গে জড়িত না।
Advertisement
এদিকে সোহানুর রহমান আজাদের জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার ছবি ও ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে পৌঁছেছে। এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে সোহানুর রহমান আজাদের তোলা একাধিক ছবিও প্রতিবেদকের হাতে সংরক্ষিত রয়েছে। এর একটি ছবিতে দেখা যায়, নুরুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে বৈঠক করছেন সোহানুর রহমান আজাদ।
এ আসামিপক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম বলেন, আসামি সোহানুর রহমান আজাদ জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। ঝুঁকি নিয়ে দুর্দিনে জামায়াত করেছেন। আবার এখনও রাজনৈতিক মামলায় জেল খাটছেন। এটা চরম বৈষম্য।
আসামি জামায়াত নেতা আজাদের ছোটভাই ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কোতয়ালী থানার ৩৭নং ওয়ার্ডের বাংলাবাজার ইউনিট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, গত ৩ আগস্ট পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হই আমি। আমার ভাই শাহবাগে আন্দোলন করে। অথচ সে এখন আন্দোলনে হামলার মামলায় আসামি হয়ে জেল খাটছে। আমি এই অবিচারের বিচার চাই।
রিয়াজ হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডির সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৭ আগস্ট বিকেলে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের মা মোছা. শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সোহানুর রহমান আজাদ এ মামলার ১৩২ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
Advertisement
গত ১৩ মার্চ সোহানুর রহমান আজাদকে রাজধানীর বঙ্গবাজারের নিজ দোকান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এমআইএন/এমআরএম/এমএস