প্রবাস

বেলজিয়ামের লিয়েজ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ

বেলজিয়ামের লিয়েজ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ

ঈদ শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি হৃদয়ের মিলন, আত্মার বন্ধন এবং সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ। বেলজিয়ামের লিয়েজে বাংলাদেশ কমিউনিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে এমনই এক হৃদয়ছোঁয়া ঈদ পুনর্মিলনী, যেখানে অনুভব করা গেছে প্রবাসের মধ্যেও মাতৃভূমির গভীর আবেগ।

Advertisement

স্থানীয় সময় রোববার, লিয়েজ শহরের একটি সুশোভিত অডিটোরিয়ামে এই মিলনমেলার আয়োজন করা হয়। সঞ্চালনায় ছিলেন কমিউনিটির দুই পরিচিত মুখ—সাইদুর রহমান লিটন ও মাসুদ মোড়ল যাদের সাবলীল উপস্থাপনায় পুরো অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত ও সজীব।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মাসুদুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মো. মুবিনুল কবীর (মিনিস্টার) এবং মো. আলমগীর হোসেন (ইকোনমিক কাউন্সেলর)।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কমিউনিটির সাইদুর রহমান লিটন। বক্তব্য দেন কমিউনিটি নেতা, সানোয়ার আলী সিদ্দীক এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আহসান হাবীব। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, আপনারা যেখানেই থাকুন না কেন, আপনারা বাংলাদেশেরই প্রতিনিধি। এই বেলজিয়ামে আপনাদের প্রতিটি ভালো কাজ, প্রতিটি আন্তরিক প্রচেষ্টা বাংলাদেশের পরিচয়কে আরও উজ্জ্বল করে।

Advertisement

তিনি আরো বলেন, আজকের এই ঈদ পুনর্মিলনী কেবল আনন্দ বিনিময়ের জায়গা নয়, এটি আমাদের দায়িত্ব ও শিকড়কে স্মরণ করার উপলক্ষ। আমরা যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শেখাতে পারি—প্রবাসে থেকেও কীভাবে দেশপ্রেম ও ঐক্য ধরে রাখা যায়। মত-পথের ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান রক্ষার প্রশ্নে আমরা যেন একতাবদ্ধ থাকি।

অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল, প্রাণের উচ্ছ্বাস, হৃদয়ের উষ্ণতা এবং বাংলাদেশের গন্ধে ভরপুর এক ঈদ উৎসব। শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রবাসীরা যেন ফিরে গিয়েছিলেন শৈশবের ঈদ আনন্দে, পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে স্মৃতিচারণা আর হাসি-আড্ডায় ভরে উঠেছিল চারপাশ। ছোট-বড়, নতুন-পুরাতন প্রজন্ম মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল এই উৎসবে।

ঈদ পুনর্মিলনী শুধু একটি সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল না, এটি ছিল প্রবাসে বাঙালিদের এক উজ্জ্বল ঐক্যের প্রতিচ্ছবি। অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনায় ছিলেন, মাসুদ মোড়ল। বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন মো. নিজাম, ভূইয়া হাবিবুল হাসান সোহাগ, মিয়া জলিল মান্নান, আহম্মেদ শাজাহান, মুন্সি ময়নুল রুমান, মোহসিন হোসাইন আক্কাস, সিকদার সুজন,খান রাজীব মন্টু, হাসান মন্টু রনিও জুয়েল।

দিনব্যাপী আয়োজিত লিয়েজের অডিটোরিয়ামটি যেন একদিনের জন্য রূপ নিয়েছিল এক টুকরো বাংলাদেশে, যেখানে সংস্কৃতি, ভালোবাসা, ঐক্য ও প্রেরণার সুরে মিলিত হয়েছিল শত শত হৃদয়। এমন আয়োজন শুধু উৎসব নয়, এটি প্রমাণ করে—প্রবাসেও বাংলা বেঁচে থাকে, বাঙালির হৃদয়ে, উৎসবে এবং দায়িত্বে।

Advertisement

এমআরএম/এমএস