দুই কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর মঙ্গলবার (১৩ মে) দেশের শেয়ারবাজারে আবার ঢালাও দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
Advertisement
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। তবে প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেন পার হতেই শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায় এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বিক্রির চাপও বাড়তে থাকে।
মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় নাম লেখাতে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে এই ধারা। ফলে ঢালাও দরপতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। সেই সঙ্গে ক্রেতা কম থাকায় কমে লেনদেনের গতিও।
দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে মাত্র ৫৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৯টির। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩২টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১৭৮টির দাম কমেছে। আর ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
Advertisement
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৯টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৭০টির দাম কমেছে এবং ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬১টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩২টির দাম কমেছে এবং ২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৬ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৯৮ পয়েন্টে নেমে গেছে।
সব কটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৬৪ কোটি ৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২০ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৬ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবি ব্যাংক।
Advertisement
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, যমুনা ব্যাংক এবং কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস/জিকেএস