কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে জানিয়েছে, তারা তাদের সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধ করে সংগঠন বিলুপ্ত করতে চলেছে। গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ ফিরাত নিউজ এজেন্সির বরাতে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। পিকেকের এই পদক্ষেপের ফলে তুরস্কের সঙ্গে তাদের চার দশকের রক্তক্ষয়ী সংঘাত অবসানের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
Advertisement
সম্প্রতি ইরাকের উত্তরে অনুষ্ঠিত পিকেকের ১২তম কংগ্রেসের পর এই ঘোষণা এলো। সোমবার (১২ মে) পিকেকের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সংগঠন তার ঐতিহাসিক দায়িত্ব পূর্ণ করেছে এবং সশস্ত্র সংগ্রামের পথ পরিত্যাগের মাধ্যমে পিকেকের সংগঠন কাঠামো বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন>>
পাকিস্তানের পাশে তুরস্ক, ভারতের হামলাকে বললো ‘উসকানিমূলক’ তুরস্ক যে কারণে প্রকাশ্যেই ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সমর্থন করছে দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন/ তুরস্কে গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরেছেন এরদোয়ানএতে আরও জানানো হয়, পিকেকের নামে পরিচালিত সব কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
Advertisement
এই পদক্ষেপ এসেছে এমন এক সময়ে, যখন অঞ্চলজুড়ে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে — সিরিয়ায় নতুন প্রশাসন, লেবাননে হিজবুল্লাহর দুর্বলতা এবং গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলছে।
বন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালান চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিকেকের প্রতি অস্ত্র পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর গোষ্ঠীটি এক তরফা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও শান্তি আলোচনার জন্য আইনগত কাঠামোর দাবি জানায়।
তুরস্কের ক্ষমতাসীন একে পার্টির মুখপাত্র ওমর চেলিক বলেছেন, এটি ‘যদি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে তা হবে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’
ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিততবে এই উদ্যোগের বিনিময়ে পিকেকে কী ধরনের ছাড় পেতে পারে — তা স্পষ্ট নয়। অস্ত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া, কারা সেটি তদারকি করবে এবং যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ — এসব বিষয়ে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
Advertisement
তুরস্কের জোট সরকারে থাকা কট্টর ডানপন্থি নেতা দেভলেত বহচেলি এই শান্তি উদ্যোগ চালু করেছিলেন গত অক্টোবর মাসে। তিনি ইঙ্গিত দেন, পিকেকে যদি সহিংসতা পরিত্যাগ করে, তবে ওজালানকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এই প্রক্রিয়াকে বলেছেন ‘সন্ত্রাসের প্রাচীর ভাঙার এক ঐতিহাসিক সুযোগ।’
পিকেকে ১৯৮০-এর দশক থেকে তুরস্কে কুর্দিদের অধিকারের দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এই সংঘাতে কয়েক দশকে প্রাণ হারিয়েছে বহু মানুষ। তুরস্কসহ বহু পশ্চিমা দেশ পিকেকেকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/