বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিনকে পদত্যাগ করতে মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
Advertisement
সোমবার (১২ মে) দুপুরে একাডেমিক শাটডাউনের মধ্যে ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিক্ষোভ সমাবেশের পর মিছিল করে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।
আন্দোলনের ২৮তম দিনে এ ঘোষণার মধ্যদিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে মেনে নিয়ে উপাচার্য সরিয়ে দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কথার কোনো কর্ণপাত করেননি। তাই মঙ্গলবার দুপুর ২টার মধ্যে উপাচার্য যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেবো।’
Advertisement
আরেক শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দাবি মেনে না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা একসঙ্গে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দ্রুত আমাদের দাবি মেনে না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউই ভালো নেই। এই ফ্যাসিস্ট মনোভাবের স্বৈরাচারী উপাচার্যকে যদি থাকেন তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে যাবে।’
বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান উন্মেষ রায় বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানাই। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে যাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেউই চান না, তাকে অবিলম্বে অপসারণ করে সংকটের সমাধান করুন।
এ বিষয়ে ববি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন ও প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Advertisement
এদিকে সোমবার শিক্ষার্থীদের ডাকা একাডেমিক ও প্রশাসনিক শাটডাউনে ববিতে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। দিনভর ২৫টি বিভাগের পরীক্ষা চললেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে দেখা যায়নি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘোরাফেরা করে সময় কাটিয়েছেন।
এরইমধ্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষকরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহমত পোষণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসসহ ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে মশাল মিছিল, মহাসড়ক অবরোধ, ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি, উপাচার্যের বাসভবনে তালা, সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শাওন খান/এসআর/এমএস