গেল মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় পাকিস্তানের বিভিন্ন ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দিয়েছে। আজ শনিবার সাময়িক যুদ্ধবিরতির আগ পর্যন্ত সীমান্তবর্তী দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
Advertisement
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের যুদ্ধাংদেহী অবস্থার মধ্যে গতকাল শুক্রবার স্থগিত করা হয় পিএসএল ও আইপিএল। এরপর পিএসএলের ক্রিকেটারদের আরব আমিরাতে সরিয়ে নেয় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। অন্যদিকে এক সপ্তাহের জন্য আইপিএল স্থগিত করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
এবারের পিএসএলে বাংলাদেশ থেকে পিএসএল খেলতে যান রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। রিশাদ লাহোর কালান্দার্সের হয়ে, আর নাহিদ রানা যোগ দেন পেশোয়ার জালমিতে।
দুই দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে রিশাদ ও নাহিদ রানাদের নিয়ে বাংলাদেশে সৃষ্টি হয় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ক্রিকেটারদের নানাভাবে আশ্বস্ত করে এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী করার চেষ্টা করে। ক্রিকেটাররা যেন ভেঙে না পড়েন, সেজন্য পিসিবির পক্ষ থেকেও চেষ্টা ছিল।
Advertisement
মানসিকভাবে ক্রিকেটারদের চাঙা রাখতে অনেক তথ্যও ক্রিকেটারদের কাছে গোপন রাখেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি। আজ শনিবার আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গিয়ে সেসব নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রিশাদ।
রিশাদ জানান, পিসিবি চেয়ারম্যান শুরুতে চেয়েছিলেন পিএসএলের বাকি ম্যাচগুলো করাচিতে আয়োজন করতে। কিন্তু খেলোয়াড়দের সঙ্গে এক সভার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। এমনকি পাকিস্তানে যে ভারত ড্রোন হামলা চালিয়েছে, তা ক্রিকেটারদের কাছে গোপন করেছিলেন পিসিবি চেয়ারম্যান।
ডানহাতি টাইগার লেগস্পিনার বলেন, ‘মূলত আমাদের মতামত জানার জন্যই সভা ডাকা হয়েছিল। প্রায় সব বিদেশি খেলোয়াড়ই বলেছিলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে টুর্নামেন্ট চালিয়ে নেওয়ার জন্য একমাত্র নিরাপদ স্থান হচ্ছে দুবাই।’
রিশাদ বলেন, ‘হ্যাঁ, পিসিবি চেয়ারম্যান চেষ্টা করেছিলেন আমাদের রাজি করাতে যেন করাচিতে ম্যাচগুলো হয়। তখন তিনি আমাদের কাছ থেকে গোপন করেছিলেন যে এর আগের দিন দু’টি ড্রোন হামলা হয়েছিল – যা আমরা পরে জানতে পারি। এরপর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিই এবং পিসিবি চেয়ারম্যান আমাদের দুবাই পৌঁছাতে অনেক সাহায্য করেন। আল্লাহর রহমতে আমরা নিরাপদে পৌঁছেছি। তাকে এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই।’
Advertisement
দুবাইয়ের উদ্দেশে রিশাদদের বিমান আকাশে উড়ার কিছুক্ষণ পরই পাকিস্তানের ওই বিমানবন্দরে মিসাইল হামলা চালায় ভারত। আধ ঘণ্টা আগে এই হামলা হলে বড় দুঃসংবাদ আসতে পারতো।
ওই হামলা নিয়ে রিশাদ বলেন, ‘দুবাই নামার পর আমরা শুনলাম যে আমাদের উড্ডয়নের ২০ মিনিট পরই ওই বিমানবন্দরে একটি মিসাইল আঘাত হানে। খবরটা খুব ভয়ঙ্কর ছিল এবং মর্মান্তিকও। দুবাই পৌঁছে আমরা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি।’
পরিবারের উদ্বেগের বিষয়ে রিশাদ বলেন, ‘আমি যখন বাইরে খেলতে যাই, তখন আমার পরিবার সবসময় চিন্তায় থাকে যে পরিস্থিতি ভালো কি না। এবারও যখন তারা পাকিস্তান সম্পর্কে খবর পেল– বোমা বিস্ফোরণ, মিসাইল হামলার মতো ঘটনা– তখন স্বাভাবিকভাবেই তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।’
‘আমি চেষ্টা করেছি তাদের বোঝাতে, চিন্তা না করতে। তাতে তারা কিছুটা স্বাভাবিক হয়’- যোগ করেন রিশাদ।
এমএইচ/