কোনো রাজনৈতিক দলই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরোধিতা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেছেন, যে কারণে আজ থেকে ৮৫ বছর আগে হিটলারের দলকে নিষিদ্ধ করা হয়, ঠিক একই কারণে বহু আগেই ফ্যাসিবাদী-বাকশালীদের নিষিদ্ধ করা সম্ভব ছিল।
Advertisement
শনিবার (১০ মে) বিকেলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর উত্তরায় শহীদ মীর মুগ্ধ চত্বরে নাগরিক উন্নয়ন ফোরাম ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মিছিল পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলেও তারা জনগণের সঙ্গে পুরোপুরি সুবিচার করতে পারেনি। মূলত, তারা জনগণের পালস বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত তারা কোনো বিশেষ গোষ্ঠী বা মহলের আনুকূল্য নিয়ে ক্ষমতায় আসেননি বরং ছাত্র-জনতার ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। তাই তাদের কারও মুখের বা চোখের দিকে তাকালে চলবে না বরং জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে নিজেদের করণীয় নির্ধারণ এবং কালবিলম্ব না করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের নিষিদ্ধ করে গণহত্যার দায়ে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে আশ্বস্ত করে বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করলে তারা নিজেরা এর প্রতিবাদ করতে পারবে না। কোনো রাজনৈতিক দলও সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করবে না, সুশীলরাও এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেবে না। সর্বোপরি কোনো পত্রিকাও সম্পাদকীয় লিখে এর বিরোধিতা করবে না। তাই সরকারের ভয়ের কোনো কারণ নেই। তিনি সরকারকে শনিবার সন্ধ্যার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।
Advertisement
তিনি বলেন, আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদীদের পতন হলেও তাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু সরকারকে সব বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেই দেশ, জাতি ও মানবতার স্বার্থে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থায় হাতে নিতে হবে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে কোনো উপদেষ্টা যদি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিপক্ষে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অবস্থান নেন বা কারও পক্ষ থেকে এমন মনোভাব প্রকাশ পায় তাহলে তাদের পরিষদ থেকে বাদ দিতে হবে।
সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, আপনারা ছাত্রদের আন্দোলনের ফসল। তাই তাদের আর কষ্ট না দিয়ে অবিলম্বে ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক দলের মতামত নেওয়ার দরকার নেই। মতামত যদি নিতেই হয় তাহলে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মতামত নিতে হবে। অন্যথায় উদ্ভূত পরিস্থিতি সরকারের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।
ফোরামের উত্তরা অঞ্চল পরিচালক জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মুহিব্বুল্লাহ, মাহবুবুল আলম মুকুল, মাজহারুল ইসলাম, আবু সাঈদ, জননেতা আশরাফুল হক, মতিউর রহমান প্রমুখ।
এএএম/এএমএ/জেআইএম
Advertisement