স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের বেশকিছু পণ্য রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় লোকসানের মুখে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য। নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় দিনে হিমায়িত মাছ, ভোজ্যতেল ও পাটের তৈরি রশি ছাড়া আর কিছু রপ্তানি হয়নি। অর্ধেকে নেমেছে রপ্তানি বাণিজ্য।
Advertisement
ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেসব পণ্যের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তার বেশিরভাগই রপ্তানি হতো এই বন্দর দিয়ে। এতে প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে অন্তত ৩০-৪০ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানি ব্যাহত হবে।
আখাউড়া স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশের অন্যতম রপ্তানিমুখী এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ‘সেভেন সিস্টারস’ খ্যাত সাতটি রাজ্যে প্রতিদিন হিমায়িত মাছ, শুঁটকি, ভোজ্যতেল, তোলা বর্জ্য, প্লাস্টিক পণ্য, পিভিসি সামগ্রী, প্রক্রিয়াজাত খাবারসহ ১২ ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশের বেশকিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত সরকার। এতে নতুন করে সংকটে পড়েছে বন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য। নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক ও কাঠের ফার্নিচার ছাড়া তোলা বর্জ্য, প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্লাস্টিক পণ্যসহ পিভিসি পাইপ রপ্তানি হতো এই বন্দর দিয়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন পণ্য এই বন্দর দিয়ে রপ্তানির জন্য আসেনি। তবে ৪৪ টন হিমায়িত মাছ, ১৩৫ টন ভোজ্যতেল ও ১৯ টন পাটরশি ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
Advertisement
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ান জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ছয়টি পণ্যের মধ্যে চারটি পণ্যই এই বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি করা হয়। এরমধ্যে গার্মেন্টস পণ্য ও ফার্নিচার এখান দিয়ে রপ্তানি হয় না। এটা আমাদের জন্যে খারাপ খবর। লোকসানে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।’
রাজিব ভূঁইয়া নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এসব পণ্য নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৩০-৪০ লাখ টাকার রপ্তানি আয় কম হবে। এতে ক্ষতির মুখে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা চাই দুই দেশের সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করুক।’
এ বিষয়ে আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, ভারতের এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। নিষেধাজ্ঞা আওতায় আসা পণ্যগুলো বন্দরে আজ আসেনি। ফলে রপ্তানি আয় কমে গেছে।
বন্দর সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৪২৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকার রপ্তানি বাণিজ্য হয়েছে। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গত ১১ মাসে রপ্তানি আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫৩ কোটি টাকা।
Advertisement
শনিবার (১৭ মে) ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শুধু ভারতের নব সেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামে স্থল কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস) বা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাবপত্র রপ্তানি করা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন বা এলসিএসের জন্যও এটি প্রযোজ্য হবে।
এসআর/এএসএম