দেশের স্বাস্থ্যখাতে ক্রয় পদ্ধতির দুর্নীতি অন্যতম বড় ব্যর্থতা। উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন কেনা ৪০ শতাংশ চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ব্যবহৃতই হয়নি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুদামে দামি ও গুরুত্বপূর্ণ এ সকল যন্ত্রপাতি সরঞ্জামগুলো দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)-এর ২০২৪ সালের এক গবেষণায় এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
Advertisement
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এডিবির এই গবেষণা তথ্য তুলে ধরা হয়।
জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খানের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে গঠিত স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার প্রতিবেদনে ওই গবেষণার তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটের বড় অংশই বিদেশি মুদ্রায় যন্ত্রপাতি ও ওষুধ ক্রয়ে ব্যয় হয়। তথাকথিত প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়া থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় এজেন্ট ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা এ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে থাকে।
Advertisement
বিশেষ করে উচ্চমূল্যের যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে—যেমন ক্যানসার চিকিৎসার কোবাল্ট মেশিন বা লিনিয়ার অ্যাক্সেলারেটর মেশিন ক্রয়ের ক্ষেত্রে অনেক সময় মন্ত্রণালয় নিজেই চাহিদা তৈরি করে, যদিও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলো এমন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন জানায়নি।
প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত একাধিক উদাহরণ তুলে ধরে জানানো হয়, খুলনার একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দশ বছর ধরে অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পড়ে ছিল।
বরিশালের একটি হাসপাতালে একটি কোবাল্ট মেশিন নয় বছর ধরে মেরামত ছাড়াই পড়ে ছিল। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট, ঢাকায় শেষ কার্যকর মেশিনটির কার্যক্ষমতা শেষ হওয়ায় রেডিওথেরাপি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংকের ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, এ খাতে অনিয়মের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৩০ শতাংশ অর্থ বাজে অপচয় হয়।
Advertisement
প্রতিবেদনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, কোভিড-১৯ চলাকালীন মূল্যস্ফীতির কারণে কিছু হাসপাতালে প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জামের দাম ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, ব্যবস্থাপনার ঘাটতি ও জবাবদিহিতার অভাব কীভাবে জনগণের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবাকে ব্যাহত করে।
ক্রয় অনিয়মের একটি দৃষ্টান্তএকটি বড় দাতাসমর্থিত প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) অনভিজ্ঞতা এবং সরকারি আর্থিক নিয়ম না জানার কারণে বড় ধরনের অনিয়ম ঘটে। এই ব্যর্থতার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হয় এবং প্রকল্প পরিচালককে অপসারণ করা হয়। এই অভিজ্ঞতা দেখিয়ে দেয়, দক্ষ ব্যবস্থাপক ও নেতৃত্বের অভাবে স্বাস্থ্যখাত কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবার পরিকল্পনা উপকরণ ঘাটতি: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা অনুমোদনে দেরি হওয়ায় পরিবার পরিকল্পনার উপকরণ, বিশেষত কনডমের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে নিয়মিত গ্রাহকরা বাজার থেকে ক্রয় করতে বাধ্য হন। এই পরিস্থিতি দেখায় যে, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া না থাকলে বহুদিনের সফল কর্মসূচিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়নে অনিয়ম ও অকার্যকারিতাবিশ্ব ব্যাংকের ২০২৪ সালের পাবলিক এক্সপেনডিচার রিভিউ অনুযায়ী, নবনির্মিত হাসপাতালগুলোর প্রায় ৪৫ শতাংশ জনবল ও মৌলিক ইউটিলিটির অভাবে চালু হতে বিলম্ব ঘটে। অবকাঠামো উন্নয়ন অনেক সময় জনস্বাস্থ্য চাহিদার পরিবর্তে রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালিত হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৩০ শতাংশের বেশি ব্যয় হয় নতুন ভবন নির্মাণে, যেখানে বিদ্যমান অবকাঠামোর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় অনেক কম। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) এবং বৃহৎ প্রকল্পে গণপূর্ত বিভাগের (পিডব্লিউডি) সহায়তায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়, তবুও স্বাধীন পর্যালোচনাকারী দলগুলোর সুপারিশ সত্ত্বেও পরিকল্পিত ও চাহিদাভিত্তিক কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।
রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতিএই অনিয়ম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করেছে, ফলে অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় স্থানে হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে যেখানে চিকিৎসক, যন্ত্রপাতি বা কর্মী নেই। অনেক স্থাপনাই কাগজে সম্পূর্ণ হলেও ব্যবহারযোগ্য নয়, যার ফলে জনগণ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়, আর ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষ লাভবান হয়।
আরও পড়ুন খসড়া ও চূড়ান্ত অনুমোদনপ্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ ৩ আইনে যা আছে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে, বেসরকারিতে সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা বিগত বছরে স্বাস্থ্যখাতে অগ্রগতি শ্লথ! রাজনৈতিক দুর্নীতির চক্রগত ২৫ বছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেট বেড়ে যাওয়ায় প্রভাবশালী মহল নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে লবিং শুরু করে। মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপর্যায়ে এমনকি মন্ত্রী পর্যায়ে এসব সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক সুবিধা বিতরণ করার অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে নির্মাণের স্থান ও প্রকৃতি নির্ধারণে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা ও ঠিকাদাররা প্রভাব বিস্তার করে, যার ফলে নিম্নমানের ও অপ্রয়োজনীয় স্থাপনা তৈরি হয়। এভাবে নতুন স্থাপনার সংখ্যা বাড়লেও বিদ্যমানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বরাদ্দ না থাকায় বহু প্রতিষ্ঠান অচল হয়ে পড়ে। এই বরাদ্দের ভারসাম্য নতুন নির্মাণ বনাম মেরামত–পুনর্বিবেচনা করা জরুরি।
যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণে অব্যবস্থাজাতীয় ইলেক্ট্রো-মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ওয়ার্কশপ (নিমিইউ) পর্যাপ্ত সম্পদের অভাবে দেশব্যাপী হাসপাতালের যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, যার ফলে প্রায় ৩৫ শতাংশ যন্ত্রপাতি অচল। এই সংস্থাটি ঢাকাভিত্তিক হওয়ায় সীমিত আউটরিচ রয়েছে এবং স্থানীয় হাসপাতালে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা না থাকায়, সব মেরামতের প্রস্তাব মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এই ব্যবস্থায় শুধু সামান্য সমস্যার স্থানীয় সমাধান সম্ভব হয়। সর্বশেষ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা হালনাগাদ হয়েছে ২০১৫ সালে, যা বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মূল্য কাঠামোও পরিবর্তিত হয়েছে, ফলে এখনই রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থার ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। এই বাস্তবতা দেখায় যে, যন্ত্রপাতি সচল না থাকলে সরকারি সেবা অকার্যকর -অনেক সময় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দালালদের হয়ে পড়ে, আর রোগীদের প্রাইভেট সেবা নিতে বাধ্য করে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আর্থিক অনিয়মের চিত্রস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা থাকলেও বাস্তবে বহু অনিয়ম বিদ্যমান। সরকারি নিরীক্ষা ব্যবস্থা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও নিরীক্ষা ইউনিট এবং ফিডিউশিয়ারি অ্যাকশন প্ল্যান) থাকা সত্ত্বেও বহু নিরীক্ষা আপত্তি অমীমাংসিত থেকে গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পাবলিক ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে একটি গবেষণায় দেখা যায়, ৮ হাজারেরও বেশি নিরীক্ষা আপত্তি এখনও নিষ্পত্তি হয়নি, যার মধ্যে অনেকগুলো ১৯৯৮-২০০৩ সালের প্রথম সেক্টর প্রোগ্রামের সময়কার।
আর্থিক মূল্য বিশালরাজস্ব বাজেটে ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন বাজেটে ৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। এর প্রায় ৯৫ শতাংশ আপত্তি রাজস্ব বাজেট সম্পর্কিত, যার বেশিরভাগই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন। এই পরিস্থিতি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং জবাবদিহিতার ঘাটতির একটি পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরে।
অর্থ ব্যবস্থাপনা ও অডিট ইউনিটের ভূমিকাস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সেক্টরওয়াইড প্রোগ্রামের শুরু থেকেই অর্থ ব্যবস্থাপনা ও অডিট ইউনিট সক্রিয় রয়েছে। উন্নয়ন সহযোগীদের চাপের ফলে, ইউনিটটির কাঠামো আনুষ্ঠানিকভাবে গঠনের দিকে কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং জনবলও বৃদ্ধি পেয়েছে। চতুর্থ এইচপিএনএসপি (২০২৪) - এর শেষ নাগাদ, পূর্বে যেসব অভ্যন্তরীণ অডিট আউটসোর্স করা হতো, সেগুলো এখন এফএমএইউ নিজেই সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে, বাস্তবায়ন পর্যায়ে বিশেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আর্থিক ও হিসাব সংক্রান্ত অনিয়মের কারণে এখনও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অডিট আপত্তি রয়ে গেছে। বিভাগীয় সচিব, যিনি প্রধান হিসাব কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত, তিনিই সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য চূড়ান্তভাবে দায়ী। কিন্তু অডিট আপত্তিগুলোর সুষ্ঠু নিষ্পত্তি না হওয়ায় এই দায়িত্ব আরও জটিল ও চাপপূর্ণ হয়ে উঠছে। অডিট আপত্তি নিষ্পত্তিতে এই ব্যর্থতা অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার দুর্বলতাকেও নির্দেশ করে, যা পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একটি বড় ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়। ফিডিউশিয়ারি ঝুঁকি হ্রাস করার লক্ষ্যে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় (এমওএইচএফডাব্লিউ) ৪র্থ এইচপিএনএসপি (২০১৭- ২০২৪)- এর সময়ে ফিডিউশিয়ারি অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণ করে।
এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ছিল এমওএইচএফডব্লিউ ও উন্নয়ন সহযোগীদের যৌথভাবে নিয়মিত পর্যালোচনার মাধ্যমে আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। তবে জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত, মোট ৫৪৪টি অমীমাংসিত অডিট আপত্তি থেকে যায়, যার আর্থিক মূল্য ৩ লাখ ১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। এমনকি ডব্লিউভি-আইডিএ, এডিবি, জাইকার মতো প্রধান উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়িত প্রকল্পগুলোতেও অডিট সম্মতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যায়নি। এটি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, এফএপিকিছু প্রচেষ্টা করলেও আর্থিক জবাবদিহিতা ও অডিট আপত্তির নিষ্পত্তি সংক্রান্ত মূল সমস্যাগুলো যথাযথভাবে সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়া, একটি ফলাফলভিত্তিক ও কার্যকর কৌশলগত হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তাকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক তদারকি ব্যবস্থা দুর্বলস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক তদারকি ব্যবস্থাগুলো বর্তমান আর্থিক অনিয়ম ও অডিট আপত্তিগুলো যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারছে না। যদিও সরকারি অডিট এবং ফিডিউশিয়ারি অ্যাকশন প্ল্যানের মতো ব্যবস্থা চালু আছে, তবুও বহু সমস্যার অমীমাংসিত রয়ে যাওয়া ইঙ্গিত দেয় যে সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থাপনা এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতের দুর্বল শাসনব্যবস্থা বেসরকারি খাতের লাইসেন্সিং এবং চিকিৎসা অবহেলা পর্যালোচনা:বাংলাদেশে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (DGHS) তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৫ হাজার ২৩৩টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মধ্যে মাত্র ৪ হাজার ১২৩টি তাদের লাইসেন্স নবায়ন করেছে এবং ১ হাজার ২৭টি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। এটি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্বল এবং আইন লঙ্ঘনের মাত্রা অত্যন্ত উদ্বেগ জনক যা রোগীদের নিরাপত্তা ও পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জসমূহ জটিল।
অনুমোদন প্রক্রিয়া: বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অনুমতি নিতে গিয়ে মালিকদের বারবার অফিসে যেতে হয়। বিভ্রান্তিকর চাহিদা: উদাহরণস্বরূপ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিবেশের লাইসেন্স চায় অথচ পরিবেশ অধিদপ্তর প্রথমে হাসপাতালের লাইসেন্স চায়।
উচ্চ ফি: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফি বেড়ে যাওয়ায়: ছোট ক্লিপগুলো লাইসেন্স করতে আগ্রহ হারাচ্ছে। লাইসেন্স পেতে বিলম্ব অনেক সময় কাগজপত্র ঠিক থাকলেও দুই তিন বছর পর্যন্ত লাইসেন্স পেতে বিলম্ব হয় এবং অননুমোদিত অর্থের দাবি নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এমইউ/এমআরএম/জিকেএস