কক্সবাজার বিমানবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন পালিয়ে আসা সেনা ও বিজিপি সদস্যসহ মিয়ানমারের ৪০ নাগরিক। এরমধ্যে ৩৪ জন রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের জেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সেনা ও বিজিপি সদস্য। অপর ৬ জন সীমান্ত অতিক্রম করে মাদকপাচার ও হত্যা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিয়ানমার নাগরিক।
Advertisement
বুধবার (৭ মে) বিকেল ৩টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে মিয়ানমার ন্যাশনাল এয়ারলাইন্স এটিআর/৭২-৬০০ বিমানের মাধ্যমে তাদের নিজ দেশে পাঠানো হয়।
কক্সবাজার বিমান বন্দরের পরিচালক মো. গোলাম মর্তুজা হাসান বলেন, বেলা সোয়া ১১টায় দিকে বিজিবির হেফাজতে থাকা মিয়ানমার সেনা ও বিজিপির ৩৪ সদস্যকে বাসযোগে বিমানবন্দরে আনা হয়। পরে পৌনে ১২টার দিকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষে মিয়ানমারের নাগরিক ৬ আসামিকে প্রিজনভ্যান যোগে আনা হয়।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের একটি বিশেষ বিমান দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের অবতরণ করে। যেহেতু কক্সবাজারে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যাত্রীতে গমনাগমনের ব্যবস্থা নেই। তাই মিয়ানমারের এ নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ব্যবস্থার আলোকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কক্সবাজার আনা হয়। মিয়ানমারের এ নাগরিকদের ইমিগ্রেশন কার্যদি সম্পাদন করে তাদের ফেরত পাঠানোর হয়েছে।
Advertisement
বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের জের ধরে গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত টেকনাফের দমদমিয়া, নাজিরপাড়া ও শাহপরীরদ্বীপ সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে পালিয়ে ৩৪ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। এরমধ্যে ২১ জন বিজিপি সদস্য এবং ১৩ জন সেনাসদস্য। তাদের এতদিন কক্সবাজারে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়।
কক্সবাজারের এডিএম মো. শাহিদুল আলম জানান, বিজিবির হেফাজতের মিয়ানমারের ৩৪ জন এবং কক্সবাজার জেলা কারাগারে সাজাভোগ শেষে দেশটির ৬ জন নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মিয়ানমারের ৪০ নাগরিককে ফেরত পাঠাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের কর্মকর্তারা কক্সবাজার বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের কার্যাদি সম্পাদন করা হয়।
এ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব নাজমুল হাসান মজুমদার, মায়ানমার প্রতিনিধি কাউন্সিলর এবং মিশন প্রধান হেটেট মাইথ লিউইনসহ স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ৪ দফায় পালিয়ে আসা আরও ৮৭৬ জনকে স্বদেশে ফেরত নিয়েছিল মিয়ানমার জান্তা সরকার। এরমধ্যে প্রথম দফায় ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জন, একই বছরের ২৫ এপ্রিল ২৮৮ জন, ৯ জুন ১৩৪ জন এবং ২৯ সেপ্টেম্বর ১৩৪ জনকে ফেরত পাঠানো হয়।
Advertisement
সায়ীদ আলমগীর/আরএইচ/এএসএম