অর্ধাঙ্গিনী
Advertisement
আমি তেমন গুরুত্বপূর্ণ কেউ নই—তারপরও আমাকে হারাতে দিলেতুমি হারাবে দুটি বিশ্বস্ত হাত—তুমি ব্যতীত দ্বিতীয় কাউকে যারা স্পর্শ করতো নাহারাবে দুটো চোখ—আজীবন মুগ্ধ হয়ে যারা শুধু তোমাকেই দেখতো
আমাকে হয়তো চলে যেতে হবে দূরে বহুদূরে আজ অথবা কালপ্রভূত্ব নয়—ভালোবাসা, আদর, হাসিমুখ, একটু প্রশ্রয়আর শান্তির পরশ চেয়েছিলাম সত্যি বলছি—তীরের ফলার মতো তোমার সুন্দর শরীরপ্রদীপের সলতের মতো টানাটানা চোখখ্যাতি বা ঐশ্বর্যের মোহ আমাকে টানে না
আমি মানুষকে মাপতে পারি সিঁকি আধুলির মতো সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম করেআমি জানি, কখনো আমার জন্যে সিঁথি ভরে সিঁদুর পরতে না তুমিবসন্ত বিকেলে চুল বেঁধে দেওয়ার আবদার নিয়ে লেখার টেবিলেআসতে না; বৃহস্পতিবার দুই পা লাল করে আলতা পরতে না শাড়ি কেনার সময় জিজ্ঞেস করতে না, লাল না সবুজে ভালো মানাবে,জামদানি নেব না সিল্ক?কস্মিনকালেও জিজ্ঞেস করতে না, ‘বেশি দেরি হবে না, যাই, প্লিজ?’
Advertisement
তুমি আধুনিক, নতুন ভাবে নানা মতবাদে ভাবতে পারোআমি পারি না—এ আমার দীনতা, সংকীর্ণতাকিন্তু দাবি নিয়ে কখনো আর দাঁড়াবো না দহনে দহনে হৃদয় রঞ্জিত হলেও মেসেঞ্জারে লিখবো না
আমার অর্ধাঙ্গিনী সিনেমা, নাটক বইয়ের আলাপে যেমন থাকবেসিঙাড়া-সমুচাও ভেজে খাওয়াবে ছুটির দিনেআমি খেতে ভালোবাসি, রাঁধতে শিখবেমাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে ক্ষিধে পায় পায়েস খেতে ইচ্ছে করেটিফিন কৌটা ভরে পায়েস রাখবে ফ্রিজে
নিচু মানসিকতা—মেল ইগো ছাইপাস হাবিজাবি ভাবছো নিশ্চয়ইকিছু যায় আসে না—এ দীনতা, সংকীর্ণতা কিংবা হলোই না হয় মানুষ হিসেবে আমার নিচুতা
আমার কাছে সমঅধিকার মানে কথায় কথায় লড়াই করা নয়স্বাধীনতা মানে আপন খেয়াল খুশি নয়অর্ধাঙ্গিনী মানে—অর্ধেক আমি অর্ধেক আলমারি অর্ধেক বিছানা সব অর্ধেক অর্ধেক তাঁর আর আমারদুজনে মিলে এক—ঠিক নদী শাসনে বিভাজিত নদীর মতোকখনো যে হাত ছাড়বে না; যে আমার মুকুট হবে, স্বপ্নের সাহস হবে, চোখের জলের বন্ধু হবে।
Advertisement
***
নিশীথের মনিশা
যে রিকশাটা থামার কথা ছিল আজ—না থেমেই টিএসসি থেকে বড় রাস্তার দিকে চলে গেছে
৭৯২ দিন, অনেক সময়!
নবান্ন উৎসব শেষে শহরে নতুন দুঃখের আনাগোনা হবেশকুন উড়বে আকাশে;যে কাকটা চোখে দেখে না বলেদলপতি হতে পারেনিমাতৃবরণে যুধিষ্ঠিরের মতো সেও রাজা হবেহেমলক আদরে দূরের বনসাইফোটাবে ফুলযৌনক্রীড়াহীন কোনো বনলতার কঙ্কালে
যে কথাটা বলার ছিল—না শুনেইযারা চলে যায়তারাও একদিন ফিরে আসে, ফিরতে হয়;দেখা হলে বলবো সেদিন,কবি হতে চেয়েও চাকরি করা কেন জরুরি… ***
নিশীথের মনিশা-২
নতুন কৃষ্ণচূড়ার আনন্দ নিয়ে এসেছো তুমিএসেছো ফিরেপুরোনো বালির গায়ে রোদ্দুর নিয়েচোখের মণি দুটো আরও কালো হয়েছে মনে হলোকিংবা কাজলও হতে পারে চোখের নিচেরব্লাশ করছিল;আগের চেয়ে কি ওজন বেড়েছে, মোটা হয়েছো, ডায়েট করছো না?ফুল আঁকা সোনালি ব্যাগটা কি পুরোনোবসন্ত, পহেলা বৈশাখ—ভালোবাসা দিবসএত এত আনন্দ উৎসব পেরোলোনতুন কি কেনোনি কিছু—গহনা বানাওনি নতুন?পুরোনো নাকফুল, ঝুমকো দুটোও পুরোনো!
যে ছেলেটা বসে ছিল পাশে, যার কাঁধে মাথা রেখেছিলেআমার চেয়ে সুপুরুষ নয়; বিলক্ষণ বলে দিতে পারি, কবিতা লিখতে জানে নাগান গাইতে পারে নাএকাডেমিক প্রোফাইলও আমার চেয়ে ঢের ভালো নয়কিন্তু তুমি ভালোবাসো, এই তার পূর্ণতাআমার পরাজয়, আমি তো তোমাকে পাচ্ছি না।
এসইউ/এএসএম