কৃষি ও প্রকৃতি

গুরুদাসপুরে বাঙ্গি চাষে বিপাকে কৃষকেরা

গুরুদাসপুরে বাঙ্গি চাষে বিপাকে কৃষকেরা

তুলনামূলক কম খরচে রসুনের সাথী ফসল হিসেবে বাঙ্গি চাষ জনপ্রিয় ও লাভজনক। ফলে নাটোরের গুরুদাসপুরে কৃষকেরা ২০ বছর ধরে বাঙ্গি চাষ করে আসছিলেন। এ বছর চাহিদা কম ও ন্যায্য মূল্য না থাকায় হতাশ তারা। জমি থেকে সংগ্রহ ও পরিবহন খরচ না ওঠায় মাঠেই পচে নষ্ট হচ্ছে অনেক কৃষকের বাঙ্গি।

Advertisement

কৃষকেরা জানান, চাহিদা থাকা এবং লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ নিয়ে বাঙ্গি চাষ করেছিলেন তারা। হঠাৎ এ বছর ক্রেতা শূন্যতা ও দরপতনে উৎপাদিত বাঙ্গি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। শ্রমিক মজুরি ও পরিবহন ব্যয় না ওঠায় এ ফল সংগ্রহে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকেরা। ফলে ক্ষেতেই পচে নষ্ট হচ্ছে অধিকাংশ বাঙ্গি।

উপজেলার পোয়ালশুড়া দড়িপাড়ার কৃষক আব্দুল ওয়াহাব জানান, এ বছর দুই বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। সমপরিমাণ জমিতে গত বছর ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হলেও এ বছর বিক্রি করেছেন মাত্র ১৮ হাজার টাকা। বাজারে ক্রেতা না থাকায় অনেক সময় বাঙ্গির স্তূপ ফেলেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

আরও পড়ুনশিক্ষকতা ছেড়ে ফল চাষে স্বাবলম্বী ছানোয়ারগারো পাহাড়ে আনারস চাষে নতুন সম্ভাবনা

উদবাড়িয়া গ্রামের টমেট আলী, নয়াবাজারের সোহেলসহ অন্তত ১০ জন কৃষক জানান, তারা অধিকাংশ বর্গা চাষি। প্রতি বিঘা জমির লিজ ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। লিজমূল্য, চাষ, বীজ, সার, পানি সেচ, শ্রমিক ও মজুরি মিলিয়ে প্রতি বিঘা রসুন চাষে খরচ লক্ষাধিক টাকা। রসুনের সাথী ফসল বাঙ্গি চাষে খরচের প্রায় অর্ধেক টাকা উঠে আসতো। কিন্তু এ বছর দাম না থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনা ও সুদমুক্ত কৃষি ঋণের দাবি তাদের।

Advertisement

স্থানীয় আড়ৎদার শাহীন আলী বলেন, ‘প্রতিদিন গুরুদাসপুর থেকে ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক বাঙ্গি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারি বিক্রি হয়। গত বছর প্রতিটি বাঙ্গির পাইকারি দাম ছিল ২০-৩৫ টাকা। কিন্তু এ বছর চাহিদা না থাকায় সেই বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকায়। ক্রেতা চাহিদা না থাকায় কম দামে কিনেও বিক্রি হচ্ছে না। এতে পচে নষ্ট হচ্ছে বাঙ্গি। পুজি হারাচ্ছেন পাইকাররা।’

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, ‘গুরুদাসপুরের বাঙ্গির সুনাম দেশজুড়ে। এ বছর ৮৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। কিছুটা দরপতন হলেও চাষিদের খুব ক্ষতি হবে না।’

রেজাউল করিম রেজা/এসইউ/জেআইএম

Advertisement