থোকায় থোকায় ঝুলে আছে বিদেশি ফল আঙুর। এমন দৃশ্য চোখে পড়লে মনে হবে বিদেশে আঙুর চাষের দৃশ্য। কিন্তু প্রথমবারের মতো দেশের মাটিতে বাণিজ্যিক চাষে সফল হয়েছেন চাঁদপুরের যুবক কামরুজ্জামান প্রধানিয়া। মাত্র ২০ শতক জমিতে আঙুর চাষ করেছেন তিনি। তার সংগ্রহে এখন পর্যন্ত ১৮ দেশের ৮৫টি জাতের আঙুর গাছ আছে। এরই মধ্যে ফলন ভালো হওয়ায় আঙুর বাজারজাত করেছেন। প্রতিদিন জেলা-উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই বাগান দেখতে আসেন।
Advertisement
চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর-মতলব পেন্নাই সড়কের কালিভাংতি এলাকায় প্রধানিয়া এগ্রোতে দেখা মিলছে ভিনদেশি এই রসালো ফল। বাঁশের মাচায় ঝুলে থাকা সবুজ আঙুর দূর থেকে পথচারীদের নজর কাড়ছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাগান থেকে ৫০ কেজি এরই মধ্যে বাজারজাতও করেছেন। এতে লাভের মুখ দেখছেন উদ্যোক্তা কামরুজ্জামান।
উদ্যোক্তা কামরুজ্জামান প্রধানিয়া বলেন, ‘২০২১ সালে শখের বশে আঙুর চাষ শুরু করি। প্রথমে ছাদ বাগান, পরে জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ শুরু করবো। আমার বাগানে ১২০টি মাতৃগাছে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে ৫০ কেজির মতো বাজারে বিক্রি করেছি। সবমিলিয়ে দেড়শ কেজি ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি।’
আরও পড়ুনমিরসরাইয়ের পাহাড়ে চাষ হচ্ছে থাই সফেদাআমের রাজ্যে চাষির স্বপ্নতিনি বলেন, ‘অক্টোবর-নভেম্বর মাসে আঙুর গাছ ছাঁটাই করলে মার্চ-এপ্রিলে ফল পাওয়া যায়। আবার শীতের সময়ে ফলন আসে। বেকারত্ব দূর করতে এখান থেকে চারা নিয়ে অনেকেই চাষ শুরু করেছেন। অনলাইনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আঙুরের চারা সংগ্রহ করছেন। অনেকে সরাসরি দেখে যাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে সহায়তা করলে আরও বড় পরিসরে আঙুরের আবাদ করতে পারবো।’
Advertisement
ফরিদগঞ্জ থেকে আসা ওমর ফারুক বলেন, ‘আমি বেশ কিছুদিন ধরে কামরুজ্জামান প্রধানিয়ার আঙুর চাষের ভিডিও দেখেছি। আমি উদ্বুদ্ধ হয়ে এখানে এসে অবাক হয়েছি। এত চমৎকার ভাবে আঙুর ধরে আছে। যে কেউ দেখলে অভিভূত হবেন। এখান থেকে চারা কিনে বাড়িতে রোপণ করবো।’
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, ‘আঙুর দোআঁশযুক্ত লালমাটি, জৈবিক সার সমৃদ্ধ কাঁকর জাতীয় মাটি এবং পাহাড়ের পাললিক মাটিতে ভালো হয়। জমি অবশ্যই উঁচু হতে হবে। যেখানে পানি দাঁড়িয়ে থাকবে না। প্রচুর সূর্যের আলো পড়বে এমন জায়গা আঙুর চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে। চাঁদপুরের মাটিতে আঙুরের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। এই ধরনের কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হলে নতুন নতুন উদ্যােক্তা তৈরি করা সম্ভব।’
এসইউ/জেআইএম
Advertisement