এবারের প্রিমিয়ার লিগে একটি নতুন সত্যের দেখা মিলেছে। তাহলো, জাতীয় দলের নিয়মিত ও সু-প্রতিষ্ঠিত পারফরমারদের চেয়ে জাতীয় দলে না থাকা বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের ব্যাট ও বল হাতে জ্বলে ওঠা এবং রান তোলা ও উইকেট শিকারে ওপরের দিকে জায়গা করে নেয়া। সবার জানা ব্যাট হাতে সবচেয়ে নজর কেড়ে টেস্ট দলে ফিরেছেন এনামুল হক বিজয়।
Advertisement
১৪ ইনিংসে সমান চারটি করে সেঞ্চুরি আর হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সবার চেয়ে বেশি ৮৭৪ রান করে রান তোলায় শীর্ষে গাজী গ্রুপের অধিনায়ক বিজয়। যদিও প্রিমিয়ার লিগ ৫০ ওভারের ফরম্যাটের, খেলা হয় সাদা বলে। তারপরও ধারাবাহিকভাবে এনসিএল, বিসিএল, বিপিএল এবং ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টপ স্কোরার হয়ে টেস্ট দলে জায়গা ফিরে পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়।
বিজয়ের পরপরই রান তোলায় দ্বিতীয় স্থানটি আবাহনীর তরুণ বাঁ-হাতি ওপেনার পারভেজ ইমনের। তার সংগ্রহ ৭৯৮। রান তোলায় তৃতীয় স্থানটি বর্তমানে কোন ফরম্যাটে জাতীয় দলে না থাকা নাইম শেখের। প্রাইম ব্যাংকের এ বাঁ-হাতি ওপেনারের সংগ্রহ ১১ ইনিংসে ৬১৮। ওদিকে সর্বাধিক উইকেট শিকারী আবাহনীর রাকিবুল হাসান। এ বাঁ-হাতি স্পিনারের ঝুলিতে জমা পড়েছে ৩০ উইকেট।
কিন্তু তাদের কেউই এবারের প্রিমিয়ার লিগের সেরা অলরাউন্ডার নন। সেই সেরা অলরাউন্ডারের পুরস্কারটি উঠেছে আবাহনীর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে।
Advertisement
ব্যাট ও বল হাতে সমান নৈপুণ্য দেখিয়ে সেরা অলাউন্ডারের পুরস্কার জিতেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। পাশাপাশি সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে ৩ লাখ টাকাও পুরস্কার পেয়েছেন আবাহনীর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
এবারের লিগে ১৪ ইনিংসে ব্যাট করা মোসাদ্দেকের সংগ্রহ ৪৮৭ রান। লিগে তার সর্বোচ্চ ৭৮ নটআউট এবং বলে রাখা ভাল সেই সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি আজ মঙ্গলবার শেরে বাংলায় মোহামেডানের সাথে অলিখিত ফাইনালে। ৪ বার নট আউট থাকা মোসাদ্দেকের ফিফটি ৩টি। এর সাথে বল হাতেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন আবাহনীর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুলের সাথে সমান ৩০টি উইকেট দখল করে সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবার মোসাদ্দেক।
আবাহনীর হেড কোচ হান্নান সরকার মোসাদ্দেকের এ অলরাউন্ড পারফরমেন্সকে দারুন প্রশংসা করেছেন। হান্নানের কথা, আবাহনীর এ সাফল্য একটা ইউনিট হয়ে খেলার ফসল। পুরো দল কোচিং স্টাফ, সাপোর্টিং স্টাফ, কর্মকর্তা এবং ক্রিকেটারদের সবাই সমানভাবে কন্ট্রিবিউট করেছে এবং এবারের আবাহনী মাঠের সেরা পারফরম করেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
সেই সেরাদের সেরা চিহ্নিত করতে গিয়ে হান্নান মোসাদ্দেকের কথা উল্লেখ করেন। তার মূল্যায়ন, ‘আমি এককভাবে কাউকে চিহ্নিত করতে চাই না। দু’তিনজনের নামও নিতে চাই না। পুরো দল একটা ইউনিট হয়ে খেলেছে। সবার কন্ট্রিবিউশন ছিল। তবে ব্যাট ও বল হাতে সমান দক্ষতা দেখিয়ে দলকে দারুণ কন্ট্রিবিউট করেছে মোসাদ্দেক। নাজমুল হোসেন শান্ত যখন ছিল তখন এবং তার অনুপস্থিতিতেও পুরো দলের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে খেলার চেষ্টা করেছে মোসাদ্দেক। তাই হান্নানের চোখে এবারের লিগে আবাহনীর সাফল্যের মিশনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোসাদ্দেক।’
Advertisement
এআরবি/আইএইচএস