২০২৭ সালের জুন মাসের মধ্যে শুল্ক-কর সংক্রান্ত সব ধরনের কর অব্যাহতি যৌক্তিক হারে কমিয়ে আনতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় এ লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। কর অব্যাহতি তুলে দেওয়া ‘উচ্চ’ অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়েছে। এছাড়া ২০৩৫ সাল নাগাদ কর জিডিপি অনুপাত সাড়ে ১০ শতাংশ করার পরিকল্পনা করেছে সংস্থাটি।
Advertisement
সম্প্রতি এনবিআর মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল নামে ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। সেখানে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ ছাড়ের অন্যতম শর্ত হলো করছাড় কমিয়ে আনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, প্রতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটিকে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকার মতো করছাড় দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, এই করছাড় না দিলে সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে আরও বেশি খরচ করতে পারত।
Advertisement
এনবিআরের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের পর আইন অনুসারে কিছু ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি থাকবে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেওয়া কর অব্যাহতি থাকবে না।
আরও পড়ুন:
খারাপ সময়েও রাজস্ব গ্রোথ ভালো, এপ্রিলে আরও ভালো হবেএতে আরও বলা হয়, সিংহভাগ করছাড় পান সমাজের সুবিধাভোগী শ্রেণি ও সুবিধাপ্রাপ্ত শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা। এতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) লোকসান হচ্ছে। করের ভার সমাজের সব শ্রেণির ওপর যৌক্তিকভাবে পড়ছে না। এসব কারণে করছাড় যৌক্তিক হারে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে এনবিআর।
যা করা হবেকর অব্যাহতি কমানোর বিষয়ে আগামী দুই বছরে পাঁচ ধরনের কার্যক্রম নেওয়ার কথা বলা হয়েছে এনবিআরের ওই পরিকল্পনায়।
Advertisement
তাতে খাতভিত্তিক করছাড় কত দেওয়া হয়, তা চিহ্নিত করা হবে। করছাড় পর্যালোচনা করে যৌক্তিক হারে কমিয়ে আনা হবে। করছাড় কমাতে অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। করহার কার্যকর করার জন্য একটি মানসম্পন্ন পরিচালনা বিধান তৈরি করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে ভ্যাটছাড় তুলে দেওয়া হবে।
এনবিআরের করনীতি, ভ্যাটনীতি ও কাস্টমস নীতি- এই তিন বিভাগ এসব কাজ করবে। ২০২৭ সালের প্রথমার্ধেই এসব কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করা আছে।
পরিকল্পনায় এনবিআর ২০৩২ সালের মধ্যে কর-জিডিপি অনুপাত ১০ শতাংশের কম না করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে ১০.৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর কথা জানিয়েছে।
লক্ষ্যমাত্রাকে উচ্চাভিলাষী উল্লেখ করে পরিকল্পনায় বলা হয়, এ লক্ষ্য দেশীয় রাজস্ব আদায় সর্বাধিক করার প্রচেষ্টা চালাবে। সমস্ত উইংয়ের জন্য শক্তিশালী প্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে।
এসএম/এমএইচআর/এমএস