হজ তিন প্রকার; ইফরাদ, কিরান ও তামাত্তু
Advertisement
ইফরাদ হজ: হজের মাসগুলোতে (শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ) শুধুমাত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদন করাকে ইফরাদ হজ বলা হয়।
কিরান হজ: হজের মাসগুলোতে (শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ) হজ ও ওমরা পালনের নিয়তে দীর্ঘ দিনের জন্য ইহরাম বেঁধে একই ইহরামে ওমরাহ ও হজ সম্পাদন করাকে কিরান হজ বলে।
তামাত্তু হজ: হজের মাসগুলোতে (শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ) ওমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম বেঁধে ওমরাহ পালন করে ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাওয়া অতঃপর হজের আগে হজের নিয়তে ইহরাম বেধে হজ সম্পাদন করাকে তামাত্তু হজ বলে।
Advertisement
অন্তরে কোনো কাজের সংকল্প করা বা সিদ্ধান্ত নেওয়াকে নিয়ত বলে। মুখে নিয়তের শব্দ উচ্চারণ করা জরুরি নয়, অন্তরে সংকল্প করলে বা সিদ্ধান্ত নিলেই নিয়ত হয়ে যাবে। তবে হজের নিয়তের শব্দ মুখেও উচ্চারণ করা উত্তম।
ইফরাদ হজ করতে চাইলে নিয়তে বলতে হবে, হে আল্লাহ! আমি হজের নিয়ত করছি, আমাকে যথাযথভাবে হজ পালন করার তওফিক দিন!
কিরান হজ করতে চাইলে নিয়তে বলবে, হে আল্লাহ! আমি একইসাথে হজ ও ওমরাহর নিয়ত করছি, আমাকে যথাযথভাবে হজ ও ওমরাহ পালন করার তওফিক দিন!
তামাত্তু হজ পালনকারী প্রথম ইহরামের সময় শুধু ওমরাহর নিয়ত করবেন। বলবেন, হে আল্লাহ আমি ওমরাহর নিয়ত করছি, আমাকে যথাযথভাবে ওমরাহ পালন করার তওফিক দিন!
Advertisement
তিনি মক্কায় গিয়ে ওমরাহ পালন শেষে ইহরাম থেকে বের হয়ে যাবেন এবং স্বাভাবিক হালাল সব কাজই করতে পারবেন। তারপর হজের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে ৮ জিলহজ মিনায় যাওয়ার আগে হজের জন্য ইহরাম বাঁধবেন এবং হজের নিয়ত করবেন। বলবেন, হে আল্লাহ! আমি হজের নিয়ত করছি, আমাকে যথাযথভাবে হজ পালন করার তওফিক দিন!
যাদের ওপর হজ ফরজহজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। সামর্থ্য থাকলে জীবনে একবার হজ করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ। আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চয় প্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য স্থাপন করা হয়েছে, তা মক্কায়। যা বরকতময় ও হিদায়াত বিশ্ববাসীর জন্য। তাতে রয়েছে স্পষ্ট নির্দশনসমূহ, মাকামে ইবরাহিম। আর যে তাতে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ হয়ে যাবে এবং সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ। আর যে কুফরি করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী। (সুরা আলে ইমরান: ৯৬, ৯৭)
হজের মৌসুমে হজে যাওয়া-আসার খরচসহ সফরে থাকাকালীন দিনগুলোতে তার ও পরিবারের লোকদের স্বাভাবিক খরচের ব্যবস্থা থাকলে এবং দৈহিকভাবে হজ করার সক্ষমতা থাকলে হজের সামর্থ্য প্রমাণিত হয় ও হজ ফরজ হয়।
কারো যদি কাবায় পৌঁছার সামর্থ্য থাকে কিন্তু তার হজের সফরের সময় পরিবার-পরিজনের দেখাশোনা ও ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা না থাকে, তার ওপর হজ ফরজ হবে না। একইভাবে কারো যদি হাত, পা, চোখ ইত্যাদি অঙ্গের কোনোটি বিকল হয় বা কেউ যদি একা চলাফেরা কতে সক্ষম না হয়, তার ওপরও হজ ফরজ হবে না।
নারীদের ওপর হজ ফরজ হওয়ার জন্য হজের সফরে তার সাথে যাওয়ার মতো মাহরাম ব্যক্তি থাকাও জরুরি। মাহরাম না থাকলে সম্পদশালী নারীর জন্য নিজে গিয়ে হজ করার আবশ্যকতা থাকে না। কোনো নারীর কাছে যদি শুধু নিজের হজে যাওয়ার মতো সম্পদ থাকে, কোনো মাহরামকে নিয়ে যাওয়ার মতো সম্পদ বা সুযোগ না থাকে, তাহলে তার ওপরও হজ ফরজ নয়।
ওএফএফ/এমএস