কৃষি ও প্রকৃতি

মিরসরাইয়ে ঢ্যাঁড়শ চাষে স্বাবলম্বী কৃষকেরা

মিরসরাইয়ে ঢ্যাঁড়শ চাষে স্বাবলম্বী কৃষকেরা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঢ্যাঁড়শ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকেরা। এতে দিন দিন চাষের পরিধি বাড়ছে। এবারও ভালো ফলন হয়েছে। উচ্চফলনশীল ও দেশীয় জাতের এসব ঢ্যাঁড়শ স্থানীয় বাজার ছাড়াও সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে দাম কম পেলেও এখন ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।

Advertisement

মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার মিরসরাইয়ে প্রায় ৯০ একর জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০ মেট্রিক টন ঢ্যাঁড়শ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। হিসাবমতে, ৯০ একর জমিতে উৎপাদিত ঢ্যাঁড়শের বাজারমূল্য ৩ কোটি টাকার বেশি। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ইছাখালী, মিরসরাই সদর, মঘাদিয়া, সাহেরখালী, ওয়াহেদপুর ও খৈয়াছড়া ইউনিয়নে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাষিদের কাছে এখন লাভজনক ফসল ঢ্যাঁড়শ। মৌসুমি সবজি হলেও উৎপাদন হয় বছরজুড়ে। অন্য সবজির তুলনায় ঢ্যাঁড়শে কীটপতঙ্গের আক্রমণ কম। শ্রমিক ও সারের খরচও অপেক্ষাকৃত কম। বাড়ির নারীরাও সহজে ঢ্যাঁড়শ তুলতে পারেন। এতে শ্রমমূল্য সাশ্রয় হয়। ফলে চাষিদের বিক্রি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।

আরও পড়ুন অভয়নগরে পোকার আক্রমণে দুশ্চিন্তায় কুমড়া চাষিরা রিপনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে সবজি চাষে সফলতা

সাহেরখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার চাষি ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমি প্রায় ৬০ শতক জায়গার ওপর ঢ্যাঁড়শ চাষ করেছি। উপজেলার গ্রামীণ বাজারগুলো ছাড়াও সীতাকুণ্ড, বড়দারোগারহাট ও চট্টগ্রাম শহরে বিক্রি করে থাকি। জমি থেকে তুলে পিকআপ ভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতি মণ ১২০০-১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রায় ৩০ বছর ধরে চাষ করে আসছি।’

Advertisement

খৈয়াছড়া ইউনিয়নের চাষি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রায় ৪০ শতক জমিতে চাষ করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার বিক্রি করেছি। আরও দেড় লাখ টাকার বিক্রি করতে পারবো। তবে প্রথমে দাম ভালো পাইনি। গত কয়েকদিন ধরে ভালো দামে বিক্রি করতে পারছি।’

ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরত এলাকার কৃষক ইকবাল হোসেন শাহীন বলেন, ‘এ বছর এক একর জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ করেছি। প্রতি বছর এ সবজি চাষ করে থাকি। এভাবে প্রায় ১৫ বছর ধরে চাষাবাদ করে যাচ্ছি। এবারও মোটামুটি ভালো দাম পাচ্ছি।’

মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘উপজেলায় প্রায় ৯০ একর জমিতে ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়েছে। এবার ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ২৫ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়ে থাকে। আগামীতে চাষ আরও বাড়বে। ঢ্যাঁড়শ চাষে সরকারিভাবে কাউকে প্রণোদনা দেওয়া হয় না।’

এসইউ/এএসএম

Advertisement