গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম কাজ ছিল বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোটা বাতিল করা। আমরা এটা করেছি। আমরা কল্পনার নয়, বাস্তবসম্মত ঢাকাকে গড়ে তুলতে চাই। আমরা ঢাকার সঙ্গে পাশের জেলাগুলোর কানেক্টিভিটি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যেন অন্য জেলাগুলো থেকে ঢাকাতে এসে মানুষ দ্রুত কাজ শেষ করে ফিরে যেতে পারে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ঢাকার পাশেই একসময় ছিল মধুপুর ভাওয়াল বনাঞ্চল, নগর তৈরি করতে যেয়ে তা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন যেন না হয়, সেক্ষেত্রে রাজউকের ভূমিকা আছে। রাজধানীর উন্নয়নে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ জরুরি। সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কী কী পরিবর্তন জরুরি, এজন্য সাধারণ মানুষের মতামত জানা প্রয়োজন। এখন রাজউক সেটা করছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অডিটোরিয়ামে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এসব কথা বলেন।
এ মতবিনিময় সভায় আরও অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম।
Advertisement
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জনবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট ও বিল্ডিং কন্সট্রাকশন অ্যাক্ট নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে। অল্প পরিবর্তনে কাজ হবে না। সময় ও বাস্তবতার চাহিদায় প্রয়োজনীয় কিছু রেখে নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, রাজউকের বোর্ডে কেবল আমলা থাকলে চলবে না। বোর্ডে শহর পরিকল্পনায় দক্ষ বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে। ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে কাজ করতে হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, রাজউক চেয়ারম্যানের রেসিডেন্সিয়াল ভবনকে কমার্শিয়াল করার ক্ষমতা রহিত হওয়া উচিত।মহাপরিকল্পনার বাইরে না গিয়েই বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এ সময় বলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে ভালো কাজ করলে রাজউকের সেবার মান আরও বাড়বে। রাজউকের যে কোনো উন্নয়নে আমার সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।
Advertisement
রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, রাজউকের প্রধান সমস্যা ইমেজ সংকট। রাজউকের কর্মকর্তাদের সততা ও দ্রুততার সঙ্গে সেবা দিতে হবে। রাজউক আর প্লট বরাদ্দ করবে না। রাজউকের যেসব জায়গা অবৈধ দখলে আছে, সেসব জমি উদ্ধার করে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করবে।
মতবিনিময় সভায় রাজউকের সহকারী পরিচালক থেকে ও অন্য উচ্চ পদমর্যাদার কর্মকর্তারা এবং সব প্রকৌশলী ও ইমারত পরিদর্শকরা উপস্থিত ছিলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) ড. মো. আলম মোস্তফা এবং রাজউকের সার্বিক কার্যক্রমের উপস্থাপনা করেন প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম। মতবিনিময় সভায় রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা রাজউকের চলমান কার্যক্রম, কর্মপরিকল্পনা, সমাপ্ত প্রকল্পের এক্সিট প্লান ও কাজের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন।
এসইউজে/এএমএ